নড়াইলে অটোভ্যানচালক কিশোর আলিফ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত আলিফ (১৫) সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের ছোট মিতনা গ্রামের কিনায়েত বিশ্বাসের ছেলে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, গত রোববার (৫ অক্টোবর) আলিফের মা রোজিনা বেগম তার ছেলেকে না পেয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে আলিফ অটোভ্যান চালাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি।
এরপর নড়াইল জেলা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে নামে। তদন্তে জানা যায়, আলিফকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল একই ইউনিয়নের চাচড়া গ্রামের বাহারুল বিশ্বাসের ছেলে মিনারুল বিশ্বাস (২২) ও হাফিজুর মোল্যার ছেলে হৃদয় মোল্যা (২০)-এর সঙ্গে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহভাজন মিনারুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ চাঞ্চল্যকর তথ্য পায়। মিনারুল স্বীকার করে, সে ও হৃদয় মোল্যা পরিকল্পিতভাবে আলিফকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করায়। এরপর আলিফ অচেতন হলে তারা তার অটোভ্যান চালিয়ে বাহিরগ্রাম বাজারে যায়।
সেখানে আলিফকে রেখে ভ্যান চার্জ দেওয়ার কথা বলে তারা হৃদয়ের মামার বাড়িতে যায়। পরে তিনজন একসঙ্গে দেবভোগ বিল এলাকায় গেলে মিনারুল ও হৃদয় মিলে আলিফের গলা টিপে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ পাশের ডোবার কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখে।
পরদিন তারা আলিফের অটোভ্যানের ব্যাটারি খুলে নড়াইল শহরের মুচিরপোল এলাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে পুলিশ অভিযানে অটোভ্যানের ব্যাটারি, ভ্যান ও আলিফের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে পালানোর সময় হৃদয় মোল্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত আলিফের মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতারকৃত মিনারুল ও হৃদয় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিন প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর এ আলম সিদ্দিকী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে