রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকায় মশার কামড়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি কর্মব্যস্ততার সঙ্গে সঙ্গে মশার উপদ্রবও বৃদ্ধি পেয়েছে। মশা নেই এমন কোনো জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে কোমলমতি শিশু, ছাত্র-ছাত্রী ও গর্ভবতী নারীদের।
পৌরবাসী জানান, মশার যন্ত্রণায় তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, মশার উপদ্রব দিন দিন বাড়লেও মশা নিধনে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এতে ডেঙ্গু সহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না তারা। পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় নালা-নর্দমা, রাস্তাঘাট, ড্রেন অপরিষ্কার, পানি জমে থাকা এবং যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে মশা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ঝোপ ও আগাছা পরিষ্কার না থাকায় মশার বিস্তার আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গোদাগাড়ী পৌরসভার সারাংপুর এলাকার মোজাম্মেল হক বলেন, "হঠাৎ করেই মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। কিন্তু পৌরসভা থেকে মশা নিধনের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। দ্রুত মশা নিধনের ব্যবস্থা না করলে বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।"
সুলতানগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, "পৌর কর্তৃপক্ষ নালা-নর্দমা এবং আশপাশে মশা নিধন স্প্রে না করায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সময় মশা নিধন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, কিন্তু নিয়মিত প্রয়োগ করা হলে হয়তো এই দুর্ভোগ এড়ানো যেত।"
পৌর এলাকার শিক্ষার্থী টুম্পা জাহান জানান, "মশা এতটা বৃদ্ধি পেয়েছে যে কয়েল জ্বালিয়েও কোনো কাজ হয় না। মশার গুনগুন শব্দ এবং কামড়ে ভীষণ বিরক্ত লাগে। বসে পড়াশোনা করতে পারছি না। সন্ধ্যার পর পড়ার টেবিল ছেড়ে বিছানায় মশারি টানিয়ে পড়তে বসতে হয়। মশার উপদ্রব ও মশাবাহিত সংক্রমণ রোধে সরকার যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে জনজীবনে স্বস্তি ফিরবে।"
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক ফয়সাল আহমেদ বলেন, "পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৫ বছরের বকেয়া বেতন ও ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। ফগার মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম আছে। মশা নিধন ও ড্রেন পরিস্কার করার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমার বদলীর আদেশের কারণে সব কাজ দেখভাল করা সম্ভব হয়নি। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে মাসব্যাপী পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগসহ সকল বিভাগের কাজের গতিবৃদ্ধির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।"
একুশে সংবাদ/এ.জে