মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে ব্যবসায়ীদের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. শহিদুজ্জামান, কুমারভোগ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি কাউসার তালুকদার, মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতা আসলাম ঢালী, দিনার মেম্বার, স্বপন বেপারী, আল আমীন ঢালী, নাসির খানসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রবিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এতে সুমন ঢালীর ফল ও চায়ের দোকান, আরিফ ঢালীর সেলুন, একটি প্লাস্টিক কারখানা, একটি লোহার স্ক্র্যাব কারখানা, নাসির খানের একটি ওয়ার্কশপ এবং আল আমীন ঢালীর একটি ওয়ার্কশপসহ মোট ৬টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আড়াইটার দিকে শিমুলিয়া ঘাটমুখী মোটরসাইকেল আরোহীরা আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে লৌহজং ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট যোগ দিয়ে আগুন নেভাতে সহায়তা করে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী নাসির খান বলেন, “রাত সাড়ে তিনটার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি আমার ওয়ার্কশপ জ্বলছে। মালামালসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
এদিন সকালে উপজেলা পিআইও মো. শহিদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন জানান, লৌহজং ও শ্রীনগরের মোট চারটি ইউনিট একযোগে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ অগ্নিকাণ্ডে কুমারভোগ পুনর্বাসন এলাকার সুমি বেগম (৩৮) নামের এক নারী দোকান হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রুজি-রোজগার শেষ। মাত্র ১০–১২ দিন আগে কিস্তিতে নতুন ফ্রিজ কিনেছিলাম, সেটিও পুড়ে গেছে। এখন আমি কোথায় যাব?”
স্থানীয়রা জানান, জীবিকা হারিয়ে সুমি বেগমসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “আপনাদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয় এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রাথমিকভাবে কিছু সহায়তা দেওয়া হলো। যেকোনো প্রয়োজনে লৌহজং উপজেলা প্রশাসন আপনাদের পাশে থাকবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে