পাহাড়ি এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার জেরে কয়েকদিনের অবরোধ, বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর খাগড়াছড়ি জেলায় টানটান পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ, মহাজনপাড়া, নারিকেল বাগান, চেঙ্গী স্কোয়ার ও শহীদ কাদের সড়ক এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় স্বনির্ভর ও নারিকেল বাগান এলাকায় কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর হয়।
ঘটনার পর খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এখনো তা বহাল রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭ প্লাটুন বিজিবি, সেনা সদস্য ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এপিবিএনও দায়িত্ব পালন করছে।
সহিংসতায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। রাতেই বৌদ্ধবিহারে নাশকতার চেষ্টা করার অভিযোগে তিন যুবককে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনার কারণে সাজেক ভ্রমণে যাওয়া প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়েছিলেন। পরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যান।
জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় শয়ন শীল (১৯) নামে এক যুবক গ্রেপ্তার হলেও অন্য আসামিদের ধরার দাবিতে জুম্ম ছাত্র-জনতা শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ চলাকালে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়। এ সময় আলুটিলায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ও নারানখাইয়া এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।
রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ঘোষণা এলেও কিছুক্ষণ পর তা প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়। পরে আবারও অবরোধ পালনের ঘোষণা আসে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত এবং সবাইকে ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে