নবারণ মহিলা সংঘের উদ্যোগে কোটচাঁদপুরে উদযাপিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা পূজা। এ বছর প্রথমবার কোনও নারী সংগঠন এই পূজা আয়োজন করায় এলাকায় তা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সংগঠনের সভাপতি বেবী রাণী সাহা জানিয়েছেন, সামনের দিনগুলোতেও পূজা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, কোটচাঁদপুরে এবার ৪৯টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে পৌরসভায় ২০টি এবং বাকি ২৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মন্ডপে। সব মন্ডপের মধ্যে ৪৮টির সভাপতি ও সম্পাদক পুরুষ। একমাত্র সাহাপাড়ার মন্ডপের সভাপতি ও সম্পাদক নারী। সভাপতি বেবী রাণী সাহা ও সম্পাদক কবিতা শর্মার নেতৃত্বে নবারণ মহিলা সংঘের শতাধিক নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পূজার কাজে নিয়োজিত আছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই বছর সাহা পাড়ার মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হয়নি। এ বছরও পূজা না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। এজন্য বেবী রাণী সাহা সহ কয়েকজন নারী আগেই সিদ্ধান্ত নেন পূজা আয়োজনের। এরপর সংগঠনের নাম ঠিক করে নবারণ মহিলা সংঘ গঠন করা হয়।
বেবী রাণী সাহা বলেন, “প্রথমে হাতে গোনা কয়েকজন নারী এগিয়েছিলেন। এখন সংগঠনে শতাধিক নারী রয়েছে, যারা পূজার বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে এবছর পূজার ব্যয় ১.৫ লাখ টাকার বেশি হবে, হাতে আছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। বাকি অর্থ নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তবে এবছর পূজা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারলে ভবিষ্যতে পূজা অব্যাহত থাকবে।”
কোটচাঁদপুর রথখোলা দূর্গা মন্দিরের সভাপতি মহেন্দ্র শর্মা বলেন, “সাহা পাড়ার নারীদের উদ্যোগ সত্যিই বিরল ঘটনা। আমি আশা করি, তাদের দেখাদেখি আরও নারীরা এগিয়ে আসবেন। স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী ও অন্যান্য সমাজকর্মীরাও তাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কোটচাঁদপুরের আহ্বায়ক পবিত্র কুমার অধিকারী বলেন, “৪৯টি মন্ডপের মধ্যে ৪৮টির সভাপতি ও সম্পাদক পুরুষ। একমাত্র নারী নেতৃত্বের মন্ডপটি নজরকাড়া উদাহরণ। তারা সরকারি বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন এবং পূজার আয়োজন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।”
কোটচাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন মাতুব্বর জানান, “পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সেপ্টেম্বর মাস থেকে মাঠে রয়েছি। এসপি স্যারের নির্দেশে আনসার ও স্বেচ্ছাসেবীরা মন্দিরগুলোতে নিরাপত্তা নজরদারি চালাচ্ছেন। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পূজা শুরু হবে। আমাদের উপজেলায় একমাত্র ঝুঁকিপূর্ণ মন্দিরের জন্য বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

