কুড়িগ্রামের রাজীবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে রক্ষা করতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ভূমিকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গ্রীষ্মকালীন খেলার সময় তার বান্ধবীরা রাজীবপুর সবুজবাগ দাখিল মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় সে স্কুলের শ্রেণীকক্ষে একা ছিল। তখন শিক্ষক রফিকুল ইসলাম কক্ষে প্রবেশ করে তাকে একা পেয়ে অনৈতিক কাজের উদ্দেশ্যে হাত ধরার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থী দৌড়ে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর বাবা জানান, স্কুলে যাওয়ার পর তিনি শিক্ষার্থীকে শুনে ঘটনাস্থলে যান। অভিযুক্ত শিক্ষককে বাইরে আনার চেষ্টা করলে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক বাধা দেন। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. এরশাদ অভিযুক্ত শিক্ষককে জুতা পেটা করেন। শিক্ষকরা সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে পরিবারটি ফিরে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, স্কুলে প্রায়শই শিক্ষকের দ্বারা ছাত্রীরা যৌন হয়রানির শিকার হয়, কিন্তু লজ্জার কারণে কেউ মুখ খোলে না। তারা রফিকুল ইসলামের বিচার ও বহিষ্কারের দাবি করেছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি অ্যাসেম্বলিতে ঘোষণা করেছেন, “শিক্ষক রফিকুল ইসলাম এই স্কুলেই থাকবে।”
শিক্ষার্থীরা দুপুরে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যান। ইউএনও শিক্ষার্থীদের তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে তারা ক্লাসে ফিরে যান। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুলে রাখা হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, হাত ধরার বিষয়টি সত্য, কিন্তু তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে ইতিমধ্যে শোকজ করা হয়েছে এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০ পিস ইয়াবাসহ দেওয়ানগঞ্জের কদমতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে সময় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়। স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সরাসরি মাদক আনার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট। পূর্বেও তাকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে