নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আড়িয়াব প্রিমিয়ার স্টিল রি-রোলিং মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের শ্রমিকরা পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা চলা এই কর্মসূচিতে শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আড়িয়াব অংশ বন্ধ করে রাখেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। শত শত যাত্রী এই অবস্থার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
শ্রমিকরা জানান, টানা পাঁচ মাস ধরে তাদের বেতন বন্ধ। ফলে ঘরভাড়া দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে, কেউ দোকানে ধার দিয়ে দিন পার করছেন। শ্রমিক রনি বলেন, “সারাদিন খেটে আমরা মিল চালাই। মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে গেছে।”
অবরোধে অংশ নেওয়া শাহাদাত, হাসান, জুলহাস, ফারুক, অলিয়ার, সেলিম ইসলাম, মন্টু ও জামিরসহ অন্যান্য শ্রমিকও একই অভিযোগ করেছেন। তারা জানান, বারবার মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের পরও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অবরোধ চলাকালে স্থানীয় তারাবো পৌর ৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকবুল ভুঁইয়া শ্রমিকদের পক্ষ থেকে মালিক কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আলোচনা শেষে মালিক আশ্বাস দেন, আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। আশ্বাস পাওয়ার পর শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও সাভারের শিল্পাঞ্চলে বকেয়া বেতন নিয়ে শ্রমিকদের অসন্তোষ নতুন নয়। শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি মাসের সাত কার্যদিবসের মধ্যে বেতন পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান তা মানে না। এর ফলে শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ বা বিক্ষোভে নামেন।
শ্রমিকদের বেতন না পাওয়ার প্রভাব শুধু তাদের উপর সীমিত থাকেনা, বরং পরিবার ও স্থানীয় অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করে। দোকানদাররা পাওনা আদায় করতে পারেন না, বাড়িওয়ালারা ভাড়া পান না, স্থানীয় বাজারে ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়।
শ্রমিক নেতা মন্টু বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু যদি প্রতিশ্রুত মতো বেতন না দেওয়া হয়, তাহলে আবারও সড়কে নামতে বাধ্য হবো।”
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে