শীত আসার আগেই কোটচাঁদপুরে মাঠজুড়ে দোল খাচ্ছে শিমের ফুল। দেখলে মনে হবে হাসছে শিমের ফুলগুলো। অনেক জমিতে ইতোমধ্যেই শিম ধরতে শুরু করেছে। অন্যদিকে বাজারে অগ্রিম শিম বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। তারা জানান, এভাবে দাম থাকলে মাত্র দুই সপ্তাহেই উৎপাদন খরচ উঠে আসবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিম একটি শীতকালীন সবজি। তবে চাষিরা বেশি লাভের আশায় মে মাসের শেষের দিকে জমিতে শিমের বীজ রোপণ করে থাকেন। ফলে আগস্ট–সেপ্টেম্বরের দিকে বাজারে অগ্রিম শিম ওঠে। এ সময় এক কেজি শিম ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এটি গ্রীষ্মকালীন সবজি হিসেবেও বাজারে আসে অথবা বলা যায় অগ্রিম শীতের সবজি। এর জীবনকাল প্রায় সাত মাস এবং নভেম্বর–ডিসেম্বর পর্যন্ত বিক্রি চলে।
এছাড়া সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে অনেক চাষি শিমের বীজ রোপণ করেন, যেগুলো প্রকৃত শীতের সবজি হিসেবে বাজারে আসে এবং মার্চ–এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া যায়। উপজেলায় মূলত ইপসি-১ ও ইপসি-২ জাতের শিমের চাষ বেশি হয়, যেগুলো স্থানীয়ভাবে ‘রূপভান-১’ ও ‘রূপভান-২’ নামে পরিচিত।

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর কোটচাঁদপুর উপজেলায় ২৪৪ হেক্টর জমিতে শিমের চাষ হয়েছে। মাঠজুড়ে ইতোমধ্যে ফুল এসেছে এবং অনেক গাছে শিম ধরেছে। ফলে চাষিরা অগ্রিম ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
সিঙ্গিয়া গ্রামের চাষি সিদ্দিক আলী জানান, তিনি ১০ কাঠা জমিতে শিম চাষ করেছেন। জমি লিজ ও বীজ রোপণ থেকে শিম ধরতে পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাজারে ভালো দাম থাকলে মাত্র দুই সপ্তাহেই এ খরচ উঠে যাবে বলে আশা করছেন।
জলদিয়া গ্রামের কিশোর ও সত্য হালদার বলেন, শিম একটি লাভজনক ফসল। মৌসুমের শুরুতে বাজারে তুলতে পারলে দাম ভালো পাওয়া যায়। এ বছর তারা ৭ কাঠা জমিতে শিম চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। মৌসুম শেষে ৬৫–৭০ হাজার টাকা আয় সম্ভব হবে বলে তাদের ধারণা।
কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন জানান, এ বছর উপজেলায় ২৪৪ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ চাষিরা বছরে দুইবার শিমের বীজ রোপণ করেন—প্রথমবার মে মাসে এবং দ্বিতীয়বার সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে। তিনি বলেন, “আমাদের উপজেলায় মূলত ইপসি-১ ও ইপসি-২ জাতের শিম চাষ করা হয়, যেগুলো স্থানীয়ভাবে রূপভান-১ ও রূপভান-২ নামে পরিচিত।”
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে