জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের রোয়াইর-তাউসারা সড়কের মাত্র ২৫০ মিটার কাঁচা রাস্তা এলাকাবাসীর জন্য এক ভয়াবহ যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কটির পুরো অংশ পাকা হলেও মাঝখানের সামান্য এই কাঁচা অংশ প্রতিদিন শত শত মানুষের চলাচলের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এটি কাদায় একেবারে কর্দমাক্ত হয়ে যায়, হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে বিকল্প পথ ধরে প্রায় সাত কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।
এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কালাই-ক্ষেতলাল উপজেলা শহর এবং জয়পুরহাট জেলা শহরে যাতায়াত করেন অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ। এছাড়া প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থীও এই সড়ক ব্যবহার করে। বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। জরুরি রোগী পরিবহনের সময়ও কাঁচা রাস্তা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরের প্রায় সব সময়ই কাঁচা অংশে খানাখন্দ থাকায় চলাচলে অসুবিধা হয়। বর্ষাকালে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। কাঁচা রাস্তার উপর দিয়ে কোনো রকম যানবাহন চলাচল না করে পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করা সম্ভব হয় না। ফলে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হয়, যা সময়, শ্রম ও অর্থের অপচয় ঘটায়।
রোয়াইর গ্রামের ভ্যানচালক রেজওয়ান হোসেন বলেন, “সকালবেলা ভ্যান নিয়ে বের হই, কিন্তু এতটা ঘুরে যেতে হয় যে দুপুর হওয়ার আগেই ক্লান্ত হয়ে যাই। যাত্রীদের কাছেও বেশি ভাড়া নিতে হয়, তাতেই ঝামেলা হয়। মাঝখানের ২৫০ মিটার রাস্তা যদি পাকা হতো, ভোগান্তি হত না।”
নওপাড়া গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র বলেন, “বছরের পর বছর শুধু আশ্বাসই শুনে যাচ্ছি। কারও কাছেই কোনো সঠিক উত্তর নেই কেন এই সামান্য অংশটি পাকা হচ্ছে না। এবারের বর্ষায় যে কষ্ট পোহাতে হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আগামী বর্ষার আগেই কাজ শেষ হোক, এটিই আমাদের দাবি।”
তাউসারা গ্রামের কলেজছাত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, “রাস্তার কাদায় পা আটকে যায়। পায়ের জুতো খুলে হাতে নিতে হয়। কখনো স্লিপ খেয়ে পড়ে যাই। অনেক সময় ভিজে জামাকাপড়ে ক্লাস করতে হয়।”
রোয়াইর গ্রামের ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন জানান, “আমি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, কাজের জন্য টেন্ডার হয়েছে। কার্যাদেশ পেলে ঠিকাদার কাজ শুরু করবেন।”
বড়তারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “রাস্তার আইডি সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণে এতদিন কাজ শুরু হয়নি। এখন জটিলতা সমাধান হয়েছে। টেন্ডারও সম্পন্ন হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।”
ক্ষেতলাল উপজেলার প্রকৌশলী মো. আব্দুল লতিফ বলেন, “টেন্ডার শেষ হয়েছে এবং কাজের অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুম চলমান থাকায় কাজ শুরুতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
একুশে সংবাদ/জ.প্র/এ.জে