নওগাঁর মান্দায় গভীর শ্রদ্ধা, দোয়া-মোনাজাত এবং স্মরণসভাসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক পাকুড়িয়া গণহত্যা দিবস। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে শহীদ পরিবার কল্যাণ ব্যবস্থাপনা কমিটি, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল—শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, গণকবর জিয়ারত, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা প্রদান।
আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম.এ. মতিন। শহীদ পরিবার কল্যাণ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মুজাহিদ হোসেন প্রামাণিকের সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরী।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন—উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মকলেছুর রহমান মকে, সহ-সভাপতি এ.কে.এম. নাজমুল হক নাজু, রফিকুল ইসলাম সরদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বেলাল হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল ইসলাম বাদল, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডি.এম. আব্দুল মালেক, ভারশেঁ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী কাবুল, সাধারণ সম্পাদক গোলাম সাকলাইন চারু, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, পাকুড়িয়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জিল্লুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৮ আগস্ট পাকুড়িয়া ও আশপাশের বিল উথরাইল গ্রামের নিরীহ মানুষদের ধরে এনে পাক হানাদার বাহিনী পাকুড়িয়া ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। সেই বিভীষিকাময় গণহত্যায় প্রাণ হারান ১২৮ জন নিরীহ মানুষ, যাদের অধিকাংশই ছিলেন কৃষক ও দিনমজুর। প্রাণে বেঁচে যান মাত্র ১৭ জন।
আলোচনা সভা শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, দিবসটি উপলক্ষে মান্দা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও পৃথক কর্মসূচি পালন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আখতার জাহান সাথীর নেতৃত্বে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে