চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী সড়কে শীতল ঝরনা খালের ওপর নির্মিত প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো ব্রিজটি ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার পেছনে ৪টি কারণ চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ৪টি সুপারিশও করেছে তারা। বুধবার (২৭ আগস্ট) ৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) জমা দেয় কমিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ।
তদন্ত প্রতিবেদনে চিহ্নিত কারণসমূহ
১. সেতুটি প্রায় ৫০ বছর আগে ইটের ভিত্তি দেয়ালের ওপর নির্মিত হয়েছিল। পরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে খালের প্রস্থ ও গভীরতা বাড়ানো হলেও সেতুটি সংস্কার করা হয়নি, ফলে ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।
২. সেতুর পূর্ব পাশের নালার পানি সরাসরি ফাউন্ডেশনে আঘাত হানায় কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৩. শিল্প এলাকায় ভারী ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যানের চাপ বহন করতে না পারায় সেতুটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
৪. ওয়াসার দুটি বড় পাইপ স্থাপন ও আরসিসি বক্স নির্মাণের কারণেও সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ে।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ
১. খালের প্রস্থ বাড়ানোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুরোনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণ।
২. ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিরোধ দেয়াল ভেঙে পুনর্নির্মাণ।
৩. ভারী যান চলাচল অযোগ্য সেতুর তালিকা তৈরি করে সেখানে নিরাপত্তা সাইনবোর্ড স্থাপন ও প্রয়োজনে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধকরণ।
৪. সেবা সংস্থাগুলো পাইপলাইন বসানোর সময় যেন সেতু বা কালভার্টের ক্ষতি না হয় তা নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট ভোরে ভারী বর্ষণের সময় ব্রিজটির একপাশ ভেঙে যায়। বর্তমানে সেতুর অন্য পাশ দিয়ে সীমিত আকারে যান চলাচল করছে। দুর্ঘটনার পর চসিক প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সদস্য ছিলেন সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিফাতুল করিম চৌধুরী ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান।
দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্রিজটির নকশা ও বাজেট চূড়ান্ত হয়েছে। প্রায় ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য নতুন সেতুর প্রস্থ হবে ২৩ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার।
একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে