সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সাদা পাথর এলাকা থেকে পাথর লুটের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনার পর সিলেটের জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনায় প্রায় ৫০ জনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তদন্তে নেমেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতায় এ অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সিআইডির (ঢাকা) বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সিলেটের সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি। বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী অনুসন্ধান চালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ জনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে।”
এতে আরও বলা হয়, পরিবেশগত অপরাধের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে যারা এ ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ২৬ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়েছে, যার মধ্যে ১১ লাখ ঘনফুট প্রতিস্থাপনও করা হয়েছে। প্রতিদিন অন্তত ৫০০ শ্রমিক, ৪০০ নৌকা ও ৩০০ ট্রাক দিয়ে কাজ চলছে। তার মতে, প্রতিস্থাপনের কাজ শেষ হতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
পাথরের সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৩০ শতাংশ পাথর এখনো উদ্ধার সম্ভব হয়নি, কারণ অনেক পাথর ভেঙে ফেলা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, তিন দিনের আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে। বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে যার কাছে লুট হওয়া পাথর পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধেই কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিস্থাপন কাজ যতটা সম্ভব প্রকৃতির কাছাকাছি রূপে সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।
একুশে সংবাদ/সি.প্র/এ.জে