গত জুলাই মাসে সারাদেশে ৫০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত ও ১,৩৫৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়কে ছোট-বড় গর্ত ও যানবাহনের অতিরিক্ত গতি দুর্ঘটনা বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, শুধু সড়ক নয়, জুলাই মাসে রেলপথে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৪১ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জন, আহত ১৪ জন এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সব মিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত ও ১,৪১১ জন আহত হয়েছেন।
সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি—১৬২টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬৯ জন এবং আহত ১৪৪ জন। বিভাগওয়ারি হিসাবে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে—১২২টি ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ২৯৫ জন আহত। বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা সবচেয়ে কম—২৩টি ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৯৫ জন আহত।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ১২০ জন চালক, ৯০ জন পথচারী, ৭০ জন নারী, ৫৬ জন শিশু, ৫০ জন শিক্ষার্থী, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫ জন শিক্ষক ও ৯ জন রাজনৈতিক কর্মী।
যানবাহনের ধরন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি জড়িত মোটরসাইকেল (২৬.০৬%), এরপর ট্রাক-পিকআপ-লরি (২৪.১৯%), বাস (১৬.৮৪%), ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক (১৪.৮৩%), সিএনজি অটোরিকশা (৬.২৮%) এবং নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা (৬.৮১%)।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪৮.২২% ঘটনায় গাড়ি চাপা, ২৬.০৮% মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯.৯৬% নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া, ৪.৩৪% বিবিধ কারণ, ০.৫৯% ওড়না চাকায় পেঁচিয়ে এবং ০.৭৯% ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে প্রাণহানি হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক মেরামত এবং বৃষ্টি-সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে