গত ছয় দিনে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা তিনজন রোগীকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়। তবে রেফার্ডকৃত তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে দুইজনই শিশু। ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম সাপ আতঙ্ক।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে খাবার খেয়ে খাটে ঘুমিয়ে ছিলেন কোটচাঁদপুর বলুহর মাঠপাড়ার নাছিমা বেগম (৪৫)। রাত ২টার দিকে তিনি সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি মাহতাব উদ্দিনের স্ত্রী।
ওই একই রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার পাকা গ্রামের শিশু রশ্মি খাতুন (৫) সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়। তাঁকেও কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে দ্রুত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর পরপরই তার মৃত্যু হয়। নিহত রশ্মি খাতুন পাকা গ্রামের আসিবুল হকের মেয়ে।
এছাড়া সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে সুতি দুর্গাপুর গ্রামের দুই বছর বয়সী শিশু সাদিয়া খাতুন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়। রাতের খাবার শেষে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকার সময় সে সাপের কামড়ের শিকার হয়। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সাদিয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নুরুজ্জামানের মেয়ে।
এই তিনটি মৃত্যুই ঘটেছে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসার পর রেফার্ড বা চিকিৎসার অভাবে। অথচ এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টিভেনাম মজুত রয়েছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “এন্টিভেনাম দেওয়ার পর শতকরা দশ থেকে পনেরো ভাগ রোগীর শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখন প্রয়োজন হয় আইসিইউ বা নিবিড় পর্যবেক্ষণের। কিন্তু আমাদের এখানে সে সুবিধা না থাকায় জটিলতা এড়াতে রোগী রেফার্ড করে দিতে হয়।”
এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমানুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে