ইলিশের ভরা মৌসুম চললেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে। জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়কে ইলিশ মৌসুম হিসেবে ধরা হলেও এ বছর তিন মাস পার হয়ে গেলেও জেলেরা প্রত্যাশিত ইলিশ পাচ্ছেন না। ফলে দিন দিন বেড়ে চলেছে জেলেদের ঋণের বোঝা, আর পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন প্রায় দুই লাখ জেলে।
ইলিশের এই সংকট দূর করে নদীতে আবারও ইলিশের আমদানি বাড়ার আশায় রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মহাজনকান্দি চেয়ারম্যান মাছঘাটে খতমে ইউনূস ও দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করেন স্থানীয় জেলেরা। বৃষ্টির মাঝেও আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রায় ৬০ জন আলেমসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাটামারা দরবারের পীর মাওলানা মুহিববুল্লাহ।
জেলেরা জানান, প্রতিদিন ট্রলারভর্তি জেলে নিয়ে নদীতে গেলেও খরচ তো উঠছেই না, বরং দিন দিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। এক মাঝি বলেন, “ট্রলারে ১৫ জন মানুষ নিয়ে নদীতে যাই। জাল ফেললেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। সংসারে এই ১৫ জনের পেছনে আরও শতাধিক মানুষ নির্ভরশীল। সবাই মানবেতর জীবনযাপন করছে।”
রফিজল মাঝি হতাশার সুরে বলেন, “তিন বার জাল ফেলেও পেয়েছি মাত্র দু`টা জাটকা আর কিছু পোয়া মাছ। সব মিলিয়ে বিক্রি করেছি ৭০০ টাকায়, অথচ খরচ হয়েছে প্রায় ২ হাজার টাকা। এমন ক্ষতি দিয়ে আর কতদিন?”
এই পরিস্থিতিতে ঈশ্বরের কাছে আশ্রয় ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না জেলেরা। তাই তাঁরা মোনাজাত করেছেন, যাতে আল্লাহ জালভর্তি ইলিশ দেন।
এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব আশাবাদ জানিয়ে বলেন, “ইলিশ মূলত সাগরের মাছ, নদীতে আসে ডিম ছাড়ার জন্য। জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীতে ডুবোচরের কারণে তাদের প্রজননপথ ব্যাহত হচ্ছে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা গেলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে এবং জেলেরা আবারও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাবে।”
একুশে সংবাদ/ভো.প্র/এ.জে