শেখ হাসিনাকে দশবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ আসলে কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার রাত ৯টার দিকে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইলে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চন্দ্রামুখী সাবলেনের ওপর জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এই সাভার, এই আশুলিয়া, এই বাইপাইলের পয়েন্টে গণ অভ্যুত্থানের সময় আমাদের ছাত্র জনতা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিল ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে। সাভার আশুলিয়া গণ অভ্যুত্থানের সময় হটস্পট ছিল আন্দোলনে। অন্য দিকে নারায়নগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, এদিকে সাভার আশুলিয়া ওদিকে গাজীপুর টঙ্গী, আপনারা প্রতিরোধ তৈরি করেছিলেন বলেই ঢাকা সুরক্ষিত ছিল। ঢাকার মানুষ রাজপথে নামতে সাহস করেছিল।
তিনি বলেন, এই সাভার আশুলিয়ায় গণ অভ্যুত্থানের সময় আমরা জানি, কি নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছিল, গুলি চালানো হয়েছিল, আমার ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল, এখানে বক্তব্য রেখেছেন শহীদ সজলের মা। যাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল নির্মমভাবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের দোসররা সারা বাংলাদেশে আমাদের ভাইদের ওপর নিপিড়ন চালিয়েছিল, সেই শেখ হাসিনাকে দশবার ফাঁসিতে ঝোলালেও তার অপরাধ আসলে কমবে না। বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ক্ষমা করবে না শেখ হাসিনাকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না আওয়ামী লীগকে। কোনো দিন ক্ষমা করবে না কোনো ধরনের রিফাইন আওয়ামী লীগকে।
তিনি বলেন, ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে আগামীতে নেতৃত্ব তৈরি হবে। দীর্ঘদিন ধরে এ উপজেলাগুলো বৈষম্য এবং বঞ্চনার শিকার হয়েছে। আমরা মনে করি এই পাঁচটি উপজেলায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব। শ্রমিক অঞ্চল রয়েছে এই সাভারেও। কিন্তু নানা কারণে শ্রমিকরা আন্দোলন গড়ে তোলে। কারণ শ্রমিকদের নায্যমুজুরি দেওয়া হয় না। এই শ্রমিকরাই আমাদের গণ-অভ্যুত্থানে শক্তি জুগিয়েছিলো। রাজপথে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলো। আমরা সেই শ্রমিকের নায্যমুজুরির জন্য লড়াই করতে চাই। আমরা সাভার-আশুলিয়াসহ পুরো ঢাকা জেলাকে চাঁদামুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পথে প্রান্তরে ৩০ দিন জুলাই পদযাত্রা করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, আমাদেরকে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের পদযাত্রায় যে জনস্রোত নেমে এসেছে সে জনস্রোতে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা থেমে যাইনি, এই জনস্রোত থামানো যাইনি, পদযাত্রা থামানো যাইনি। ইনশাল্লাহ আগামীর বাংলাদেশে, আগামীর ঢাকাতে এনসিপির দিকে এই জনস্রোত থামানো যাবে না।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির ঢাকা জেলার নেতা মেহরাব সিফাতের সভাপতিত্বে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির মূখ্য সংগঠক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারি, ডা. তাসনীম জারাসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে, সন্ধ্যা ৬টায় পথসভা শুরুর কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় নেতারা সভাস্থলে আসেন রাত ৯টার দিকে। সন্ধ্যা থেকেই নেতাকর্মীরা সভাস্থলে যোগ দিতে থাকেন। সভা শুরুর পর অন্তত দুই শতাধিক নেতাকর্মী এতে অংশ নেন। এ সময় সভাস্থলের আশপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য, এপিবিএন ও র্যাব সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।
একুশে সংবাদ/সা.প্র/এ.জে