বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ—এক সময়ের ‘ছোট কলকাতা’ নামে খ্যাত ১৬৫ বছরের পুরনো নীলকুঠির, কুঠিবাড়ি এবং রবার্ট মোরেলের নাম অনুসারে গঠিত এই উপকূলীয় উপজেলা। পানগুছি নদীর দু’পাশ ঘেষা, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এই মোরেলগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে ১৬টি ইউনিয়ন ও ১৩৮টি গ্রাম, আয়তন প্রায় ৪৩৮ বর্গমাইল।
এই উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে প্রায় আড়াই বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন সিরাজগঞ্জ জেলার সন্তান আবদুল্লাহ আল জাবির। তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই পদে যোগদান করেন। প্রকৌশল বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন এই কর্মকর্তা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্মরত।
যোগদানের পর থেকেই আবদুল্লাহ আল জাবিরের কর্মদক্ষতা, আন্তরিকতা ও জনবান্ধব আচরণ এই উপকূলীয় জনপদের মানুষের হৃদয় জয় করেছে। তাঁর নেতৃত্বে মোরেলগঞ্জে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, তা শুধু পরিসংখ্যানে নয়, দৃশ্যতই প্রতিফলিত হচ্ছে।
গত দুই বছরে তাঁর তত্ত্বাবধানে ১০-১৫টি কালভার্ট নির্মাণ, ৭১ জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীর নিবাস নির্মাণ, টিআর-কাবিখা প্রকল্পের আওতায় বহু অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া তিনি ঢেউটিন, কম্বল, শুকনো খাবার বিতরণসহ জিআর কর্মসূচি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করেছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অন্তত ৮-১০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। কাঁচা, পাকা ও ইট-সোলিং রাস্তা মিলিয়ে প্রায় ৪০-৫০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, সিসি ঢালাই রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট সংস্কার, গাইডওয়াল নির্মাণ, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান সংস্কারসহ ৪০০টির অধিক প্রকল্প তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।
প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে কাজ পরিদর্শন করেন, যাতে কাজের মান এবং জনসেবামূলক দিকটি নিশ্চিত হয়। তার এমন আন্তরিকতায় মোরেলগঞ্জবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ আল জাবির বলেন, “সিডর, আইলা, রেমালের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এই মোরেলগঞ্জে দুই বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। সবার সহযোগিতায় কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। মোরেলগঞ্জবাসীর ভালোবাসা ভবিষ্যতে আমাকে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা দেবে।”
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব আব্দুল আল মামুন এ বিষয়ে প্রতিবেদককে জানান, “মোরেলগঞ্জ সুন্দরবনের সন্নিকটে হওয়ায় বিশেষ নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। জেলা প্রশাসকের অনুরোধ পেলে উন্নয়নের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে। তিনি ইউএনও ও পিআইও’র কাজের প্রশংসা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন।”
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে