AB Bank
  • ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চুয়াডাঙ্গায় কৃত্রিম মরুভূমিতে বেড়ে উঠছে দুম্বা


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১২:২৮ পিএম, ২৪ জুলাই, ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় কৃত্রিম মরুভূমিতে বেড়ে উঠছে দুম্বা

চুয়াডাঙ্গায় বেড়ে উঠছে মরুর প্রাণী দুম্বা। সাধারণত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে যার বেশি বসবাস, সেই দুম্বার খামার গড়ে তোলা হয়েছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায়। ছোট্ট কৃত্রিম মরুভূমি তৈরি করে লালন-পালন করা হচ্ছে এসব দুম্বা। এলাকার আবহাওয়া দুম্বা পালনের জন্য অনুকূল হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে অবস্থিত এই খামারে দুম্বা ছাড়াও বিভিন্ন পশুপাখি লালন-পালন করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের অদূরে কোষাঘাটা গ্রামে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ‘গো গ্রীন সেন্টারে’ পরিকল্পিতভাবে দুম্বা প্রজনন খামারে পালিত হচ্ছে এবং এখান থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করা হচ্ছে দুম্বা। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ জেলায় দুম্বা পালন ও সম্প্রসারণে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই প্রজনন খামারে বর্তমানে দু’টি জাতের দুম্বা রয়েছে। এক হলো মধ্যপ্রাচ্যের সাদা রঙের ‘আয়োসি’ এবং অন্যটি আফ্রিকার সাদা-খয়েরি রঙের ‘রেড মাশাই’। দুম্বা মূলত ছাগল-ভেড়া পালনের মতোই পালন করা যায়। সবুজ ঘাস, খড়, গমের ভূষি, চালের কুড়া, ভুট্টা ভাঙা, সরিষার খৈল, চিটাগুড়, ছোলা, গাছের পাতা খেয়েই প্রতিনিয়ত বেড়ে উঠছে এরা। সবুজ ঘাস ও কাঁঠাল পাতা দুম্বার পছন্দের খাবার।

৩ থেকে ৪ মাস বয়সী দুম্বার বাচ্চার ওজন হয় ১২ থেকে ১৫ কেজি। দেড় বছর বয়সী ছাগি দুম্বার ওজন ৪৫ কেজি এবং আড়াই বছর বয়সী পাঁঠা দুম্বার ওজন ৭০ থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত হয়। তারা গর্ভধারণের ৬-৭ মাস পর এক বা দুটি বাচ্চা প্রসব করে। সাধারণত ১০ থেকে ১২ মাস বয়সে দুম্বা গর্ভধারণের উপযুক্ত হয়। ছয় মাস অন্তর পিপিআর ও গোট পক্স টিকা এবং তিন মাস পর পর কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হয়। খামার থেকে ইচ্ছুক ক্রেতাদের তালিকা করে বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

খামারের সহায়ক মনোয়ার হোসেন বলেন, “দুম্বা মরুভূমি পছন্দ করে। তাই এখানে ছোট পরিসরে কৃত্রিম মরুভূমি তৈরি করে রাখা হয়েছে।”

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের লাইভস্টক টেকনিক্যাল কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, “দুম্বাগুলো খুবই নিরীহ। কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি করে না। বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়, বাচ্চাগুলোও খুব সুন্দর হয়। আমরা চেষ্টা করছি উপকারভোগীদের মধ্যে দুম্বা পালন ছড়িয়ে দিতে।”

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী কামরুজ্জামান যুদ্ধ জানান, “২০১৯ সাল থেকে দু’টি জাতের দুম্বা আমরা পালন করছি। এই প্রজনন খামার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা দুম্বার বাচ্চা সরবরাহ করি। পারিবারিক পর্যায়ে ছোট খামার গড়ে তোলার জন্য আমাদের সদস্যদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।”

দুম্বা ক্রেতা আব্দুল লতিফ বলেন, “গত ৪-৫ বছর ধরে আমি ওয়েভ ফাউন্ডেশন থেকে দুম্বা কিনছি। এখানকার দুম্বাগুলো মানসম্মত, ভালো। ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়ায় স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। আমি এগুলো ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করি।”

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, “প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন খাতে দুম্বা পালন একটি সম্ভাবনাময় খাত। চুয়াডাঙ্গার ওয়েভ ফাউন্ডেশন আমাদের সহযোগিতায় দুম্বা প্রজনন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।”

দুম্বা পালন এ জেলায় একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে কিছু অসাধু খামারি ভেড়ার একটি জাতকে দুম্বা বলে বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে। প্রকৃত দুম্বা কিনতে হলে প্রজনন খামার থেকেই সংগ্রহ করা নিরাপদ। মাংস সমৃদ্ধ দুম্বা পালন ও সম্প্রসারণ করা গেলে খামারিরা যেমন লাভবান হবে, তেমনি দেশের মাংসের চাহিদাও মিটবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ দুম্বা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝেও রয়েছে নানা কৌতূহল। দেশে কোরবানিকৃত বেশিরভাগ দুম্বাই আমদানি করা হয়। দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং দামও নাগালের মধ্যে থাকবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

তবে এ সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজন সরকারি সহায়তা। সরকারি উদ্যোগে ব্যাংক ঋণ সুবিধা চালু করা গেলে দুম্বা পালন বেকার জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার অন্যতম মাধ্যম হতে পারে।

 

একুশে সংবাদ/চু.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!