পরিবার চেয়েছিল সন্তান হোক সেনা কর্মকর্তা, কিন্তু তৌকিরের স্বপ্ন ছিল বৈমানিক হওয়ার। দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত এই তরুণ বৈমানিক প্রাণ হারালেন প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায়। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর।
তৌকিরের পরিবারের বর্তমান ঠিকানা রাজশাহী শহরের উপশহরে হলেও তাদের আদি নিবাস চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামে। যদিও এখন সেই বাড়িতে তাদের সেভাবে যাতায়াত নেই, তবে সেখানে রয়েছেন আত্মীয়স্বজন।
গ্রামের কয়েকজন নিকট আত্মীয় জানান, ছোটবেলা থেকেই তৌকিরের স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণের পথেই পা বাড়িয়েছিলেন তিনি, কিন্তু সেটাই কেড়ে নিল তার জীবন। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে পৈতৃক গ্রাম কৃষ্ণচন্দ্রপুরে।
তৌকিরের মামা শওকত আলী জানান, পরিবারের ইচ্ছা ছিল সাগর সেনাবাহিনীতে কর্মকর্তা হবেন। কিন্তু তৌকির বরাবরই ছিলেন নিজের স্বপ্নে অটল। তিনি পড়ালেখায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত রাজশাহী গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলে পড়ার পর ভর্তি হন পাবনা ক্যাডেট কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি শেষ করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।
তৌকিরের মামা আরও জানান, বছরখানেক আগে তিনি গ্রামে এসেছিলেন। কিছুদিন আগে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর স্ত্রী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি কোথায় দাফন করা হবে তাঁকে—পরিবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে।
আরেক মামা সেলিম জানান, প্রথমে এক সেনা কর্মকর্তার মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর পান তারা। পরে তিনি ও ঢাকায় অবস্থান করা তৌকিরের দুই চাচা সিএমএইচ হাসপাতালে ছুটে যান। এখন তারা মরদেহ গ্রহণের অপেক্ষায় আছেন।
তৌকিরের পরিবার রাজশাহীর উপশহরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তাঁর বাবা তোহরুল ইসলাম আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং মা সালেহা বেগম একজন গৃহিণী। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন শোকাহত স্বজনরা।
একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে