ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গোহালকাঠী গ্রামে শিয়াল বা বেজি ধরার জন্য পাতা বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে মুনিবা (১১) নামের পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মুনিবা পশ্চিম গোহালকাঠী গ্রামের জসিম মীরের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই গ্রামের আব্দুল খালেক জোমাদ্দার নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ওঝা পরিচয় দিয়ে দুই মাস ধরে মালেক জোমাদ্দারের পরিত্যক্ত ঘরের পেছনের বাগানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে শিয়াল ধরার ফাঁদ তৈরি করে রাখেন। তিনি নিজের ঘর থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে বৈদ্যুতিক তার টেনে বাগানে ওই ফাঁদ স্থাপন করেন।
এর আগেও ওই বৈদ্যুতিক ফাঁদে এক বৃদ্ধা ও এক শিশু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হয়েছিলেন। তবে অভিযোগের পরও ওঝা খালেক বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করেননি বা কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেননি।
শুক্রবার সকালে মুনিবা গাব কুড়াতে গিয়ে বাগানে প্রবেশ করলে অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি গোপন রাখা হয়। তবে ১৯ জুলাই শনিবার রাতে নিহতের পরিবার নলছিটি থানায় লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে ফাঁদ পেতে রাখার অভিযোগে আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত খালেক ও তার পরিবার আত্মগোপনে রয়েছেন। তারা পুলিশ ও সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
একুশে সংবাদ/ঝা.প্র/এ.জে