ঢাকার ধামরাই উপজেলার বাথুলি-মহিশাষী সড়কের বেলিশ্বর এলাকায় তিন বছরেও শেষ হয়নি মাত্র ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতুর নির্মাণকাজ। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি গ্রামের বাসিন্দারা। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন অসংখ্য শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ এবং যানবাহন।
২০২২ সালের জুন মাসে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু করে প্রথম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিরাপদ এন্টারপ্রাইজ। প্রাথমিক বাজেট ছিল প্রায় আড়াই কোটি টাকা, এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করেই সরে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে ২০২4 সালের ডিসেম্বরে নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রিন্স এন্টারপ্রাইজকে প্রায় ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় কাজটি দেওয়া হয়। বর্তমানে সেতুর প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মেলেনি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর দু’পাশে ভিত্তির কাজ শেষ হলেও মাঝের অংশ এখনও অপূর্ণ। অস্থায়ীভাবে একটি ডাইভারশন সড়ক তৈরি করা হলেও সেটি বর্ষাকালে কাদা ও শুকনো মৌসুমে ধুলাবালিতে ভরে ওঠে, যার ফলে পথচারী ও যানবাহন চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা লিপি আক্তার বলেন, “এই রাস্তাটা খুবই খারাপ। বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টির সময় কাদা, আর রোদের সময় ধুলায় কিছু দেখা যায় না। অনেক সময় অটোরিকশা আর ভ্যান উল্টে যায়।”
এলাকার মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম বলেন, “ব্রিজটার কাজ প্রায় দুই বছর ধরে ঝুলে আছে। কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রোদের ধুলা আর বৃষ্টির কাদা—দুটোই যন্ত্রণাদায়ক।”
ভ্যানচালক ইশারত আলী জানান, “তিন বছর ধরে সেতুর কাজ চলছে। বৃষ্টি হলে হাঁটাও যায় না, আর রোদে ধুলায় চোখে কিছু দেখা যায় না। বেশি মালামাল নিয়ে চলাও যায় না।”
অটোরিকশাচালক রাজীব বলেন, “কিছুদিন কাজ চলে, আবার বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির সময় গাড়ি চালানো যায় না। সরকারের কাছে অনুরোধ—এই সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করা হোক।”
এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. মিনারুল ইসলাম বলেন, “সেতুটি একবার টেন্ডার হয়েছিল, কিন্তু আগের ঠিকাদার কাজ শেষ না করায় চুক্তি বাতিল করা হয়। নতুন ঠিকাদার কাজ করছে এবং চুক্তি অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।”
একুশে সংবাদ/সা.প্র/এ.জে