টানা বৃষ্টিপাতে নোয়াখালীর ছয়টি উপজেলায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৪১ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার নিচু স্থানগুলোতে পানি জমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত পর্যন্ত সদর, কবিরহাট, সেনবাগ, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোট দুই লাখ তিন হাজার একশো মানুষ। ইতোমধ্যে ৪০টি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৪১৯ জন মানুষ এবং ২৪০টি গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নোয়াখালী সদর, সেনবাগ ও কবিরহাট উপজেলায়। সদর উপজেলায় ৩০ হাজার পরিবার, সেনবাগে প্রায় ৩ হাজার ৮৭০ এবং কবিরহাটে ৩ হাজার ৬৫০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জে ৩ হাজার ৫২০, সুবর্ণচরে ৫০০ এবং হাতিয়ায় ৩০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে বর্তমানে ২৯টি মাঠে কাজ করছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলা শহর মাইজদীসহ আশপাশের অঞ্চলগুলোতে পানি জমে রয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৎস্য অফিস, পাঁচ রাস্তার মোড়, পৌর বাজারসহ বহু রাস্তা এখনো পানির নিচে। জলাবদ্ধতার কারণে কর্মজীবী মানুষ এবং যানবাহনের চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মাইজদী হাউজিং এলাকার বাসিন্দা তাহসান হাবিব বলেন, “বৃষ্টি থেমে গেলেও এখনো রাস্তায় পানি জমে আছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় পানি নামছে ধীরে, এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলমান রয়েছে। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নালা-নর্দমা পরিষ্কার করছেন এবং দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতির আশা প্রকাশ করেন তিনি।
একুশে সংবাদ/জা.নি/এ.জে