নওগাঁর মান্দা-মহাদেবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা পাঁঠাকাটা বাজার সংলগ্ন আত্রাই নদীর পূর্ব তীরবর্তী বাঁধের রাস্তার পাশ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুজ্জামান।
গত শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও’র নির্দেশে সফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামশুল আলম বাচ্চু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাৎক্ষণিকভাবে মাটি কাটা বন্ধ করেন। পরবর্তীতে ইউএনওর নির্দেশে বাঁধের উপর গচ্ছিত রাখা মাটি বাঁধের পাশে পুনরায় বিছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে মৃত আবেজ শাহের ছেলে আহাদ ও আতাব আলী মাটি বিছানোর কাজ সম্পন্ন করেন।
স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে বাঁধের রাস্তার পাশ থেকে যেখান থেকে মাটি কাটছিল, সেখানেই আগে দু’বার ভাঙন হয়ে প্লাবনের শিকার হয়েছিল এলাকা। বর্তমানে বাঁধের দুই পাশে পুকুর থাকায় এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তবুও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সেখানে মাটি কেটে বাঁধের উপর গচ্ছিত রেখেছিলেন। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে জানাই এবং ইউএনও ও চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতে কেউ যদি অবৈধভাবে মাটি কেটে বা বালু উত্তোলনের চেষ্টা করে, তবে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে—সে যতই প্রভাবশালী হোক না কেন। অতীতেও এসব কারণে আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। আর যেন কোনো প্রভাবশালী আওয়ামী দোসর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, আমরা সেদিকে সজাগ থাকবো।”
এ ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপের জন্য তিনি স্থানীয়দের পক্ষে ধন্যবাদ জানান।
অপরদিকে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্য আব্দুল কাদের জানান, “মাটি কাটা হয়েছিল এক চাচার গরুর শেডে ভরাট দেওয়ার জন্য, এবং বাঁধের উপর একটি নির্দিষ্ট স্থানে গচ্ছিত রাখা হয়েছিল। তবে মাটির পরিমাণ বেশি হওয়ায় তা লোকচক্ষুর নজরে পড়ে। এর ফলে স্থানীয় কেউ হয়তো শত্রুতাবশত প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে। যেখানে মাটি কাটছিলাম, তা আমাদের পুরনো বালির পয়েন্ট ছিল।”
তিনি দাবি করেন, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে চেয়ারম্যানের কথায় তারা মাটি কাটা বন্ধ করেন এবং ইউএনওর নির্দেশে বাঁধের উপর রাখা মাটি বাঁধের পাশে বিছিয়ে দেন। এ ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুজ্জামান বলেন, “স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আত্রাই নদীর পূর্ব তীরবর্তী বাঁধের রাস্তা সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধ করা হয়েছে। পরে বাঁধের উপর গচ্ছিত রাখা মাটিও বাঁধের পাশে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যদি এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত হয়, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে