AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মাছ ধরার ‘বিত্তি’ তৈরি করে স্বচ্ছল চুয়াডাঙ্গার ২০০ পরিবার



মাছ ধরার ‘বিত্তি’ তৈরি করে স্বচ্ছল চুয়াডাঙ্গার ২০০ পরিবার

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শৈলমারি গ্রামের ২০০ পরিবার বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার বিত্তি তৈরির কাজ করেন। বিত্তি তৈরির কাজ করে পরিবারগুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। তারা পেশা হিসেবে বছরের অর্ধেক সময় বিত্তি তৈরিসহ কুটির শিল্পের কাজগুলো করেন।

মাছ ধরার বিত্তি তৈরির প্রধান উপকরণ বাঁশ, তাল গাছের ডগার সুতা ও নাইলনের সুতা। তাল গাছের ডগাগুলো পানিতে ভিজিয়ে রেখে পঁচিয়ে নিতে হয়। তারপর আঁশ থেকে সুতা হয়। বাঁশ সাইজ মতো কেটে তা দিয়ে কাঁটি তৈরি করতে হয়। বাঁশের কাঁটি, তালের সুতা ও নাইলনের সুতা দিয়ে গ্রামের নারী-পুরুষ নিপুণ হাতে বিত্তি তৈরি করেন। ভোর থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত কাজ চলে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে।

বর্ষায় খাল-বিল, নদী, ডোবা, পুকুর, মাঠ পানিতে থৈথৈ করে। এ সময় জেলে ও স্থানীয়রা বিত্তি পেতে কাটরা, পুঁটি, চিংড়ি, টাকি, ঝাঁয়া, বাইনসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরেন। প্রতিটি বিত্তি বাজারে বিক্রি হয় ৩০০-৪০০ টাকা দরে। বাজারে এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। কারণ এখানকার তৈরি বিত্তির মান ভালো। এখানকার বিত্তির চাহিদা রয়েছে মেহেরপুর, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায়।

যশোর জেলার বৃত্তি ক্রেতা হাসেম আলী জানান, চুয়াডাঙ্গার শৈলমারি গ্রামের বিত্তি অনেক ভালো। দাম স্বাভাবিক থাকে। এখান থেকে ২০টি বিত্তি কিনলাম। বাড়ির পাশে মাঠে পাতব মাছ ধরার জন্য।

বিত্তি তৈরির কারিগর অসীম বলেন, এখন অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি। চলতি মৌসুমে আগাম বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিশেষ করে আষাঢ় মাসে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে আষাঢ় মাস থেকে বৃত্তির চাহিদা অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, একটি বাঁশ ২০০ টাকা থেকে আড়াইশো টাকায় কিনতে হয়। তাল গাছের ডগা ৩০ টাকায় কিনতে হয়। এ কাজে অনেক বেশি পরিশ্রম। প্রতি সপ্তাহে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার বিত্তি বিক্রি হয়। এ কাজের সাথে শৈলমারি গ্রামের প্রায় আড়াইশো পরিবার জড়িত।

বিত্তি তৈরির কারিগর ময়না খাতুন বলেন, পুরুষদের পাশাপাশি আমরাও বিত্তি তৈরির কাজ করি। এতে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে। সপ্তাহে ৩-৪টি বিত্তি তৈরি করতে পারি। বিত্তি তৈরির সকল কাজ যত্ন সহকারে করতে হয়।

বৃত্তি কিনতে আশা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিলে মাছ ধরার জন্য ৬০০ টাকা দিয়ে দুটি বিত্তি কিনলাম। বিত্তি পাতলে ছোট মাছ পাওয়া যায়।
বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. এরিং বলেন, এদেরকে উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। কাজ না থাকলে তাদের খাদ্য ও অর্থ সহায়তা করা হয়। বিত্তির কাজ করে শৈলমারি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ এখন স্বচ্ছল।

শৈলমারি গ্রামের পার্শবর্তী হরিশপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনতাজ আনী বলেন, শৈলমারি গ্রামে দুই ঘর হিন্দু পরিবার প্রথম বিত্তি তৈরির কাজ করেন প্রায় ৬০ বছর আগে। এরপর স্থানীয়রা এ কাজ শেখেন। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি সহায়তা দরকার।

 

একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে

Link copied!