মেয়েকে লাল শাড়িতে সাজিয়ে সুপাত্রের হাতে তুলে দেবেন এই ছিল দেলোয়ার হোসেনের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন নিয়েই ভাগনেকে সঙ্গে করে ছুটে গিয়েছিলেন সম্ভাব্য পাত্রপক্ষের বাড়ি দেখতে। অন্যদিকে, ঘরে অপেক্ষায় ছিলেন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুখবর নিয়ে স্বামী ফিরবেন, এই আশায়। কিন্তু স্বপ্নভঙ্গ হলো হঠাৎই। পথেই থেমে গেল দেলোয়ারের জীবন। পাত্রপক্ষ দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তিনি।
বুধবার (২৫ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদগঞ্জ-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কের কালিরবাজার চৌরাস্তা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম দেলোয়ার হোসেন (৫৫)। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রূপসা গ্রামের গাইনের বাড়ির আব্দুল লতিফের ছেলে।
নিহতের ভাগনে সোহেল জানান, ‘আমার মামা দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে আমি মোটরসাইকেলে করে গিয়েছিলাম নয়ারহাট এলাকায়। সেখানে তার বড় মেয়ে লামিয়ার জন্য পাত্র দেখতে যাই। ফেরার পথে ফরিদগঞ্জ লাইফ জেনারেল হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে একটি বালুর ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে মামা গুরুতর আহত হন। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় যুবক আরমান বলেন, ‘ফরিদগঞ্জ থেকে চাঁদপুরমুখী একটি বালুর ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই চালকের পেছনে বসা আরোহী মারা যান।’
নিহতের পরিবার জানায়, দেলোয়ার হোসেন এক সময় সৌদি আরবে কাজ করতেন। প্রায় চার বছর আগে তিনি দেশে ফিরে কৃষিকাজে যুক্ত হন। তার দুই মেয়ে—বড় মেয়ে লামিয়া এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এবং ছোট মেয়ে অনিয়া সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। নিহত দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী।
দুর্ঘটনার পর ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মো. আবু তাহের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে