মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিদ্যুতায়িত হয়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা দেড়টার দিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৬নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের জামসি গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত শামীম মিয়া (২০) হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জ থানার ১৩নং পানিউমদা ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামের লুফকা মিয়ার একমাত্র ছেলে। বর্তমানে শামীম মিয়া আশিদ্রোন ইউনিয়নের ডেঙ্গারবন গ্রামে তার নানা বাড়িতে মায়ের সাথে বসবাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে শামীমসহ অন্য নির্মাণ শ্রমিকরা আশিদ্রোন ইউনিয়নের জামসি গ্রামের প্রবাসী সিরাজ মিয়ার নির্মাণাধীন বাড়ির ওপরের ট্রাকচার (টিন স্থাপন) করার সময় অসতর্কতাবশত বাড়িঘেষা বিদ্যুতের মেইন লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত হন। তাৎক্ষণিক তাকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎিসকরা শামীমকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কিশোর পোদ্দার সম্রাট বলেন, দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে বিদ্যুতায়িত একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। ঠিকাদার হেলাল মিয়া বলেন, শামীম মিয়াকে অন্য এক শ্রমিকের পরিবর্তে আজ প্রথম নির্মাণ শ্রমিকের সাথে যোগালি হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। আমি সকাল ১০টার দিকে আমার মোটর সাইকেলযোগে তাকে কাজের স্থলে নিয়ে আসি। দুপুরে আমি শ্রমিকদের নাশতা আনার জন্য বাইরে আসার পর এ ঘটনা শুনেছি। তার অসতর্কতাবশত এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে নিহতের আপন খালাতো ভাই, শাহাদত মিয়া বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবারে শামীমের জন্ম। সে তার বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান। দুই বোনের মাঝে সে মেঝ। নির্মাণ শ্রমিকসহ যখন যে কাজ পেত সে সেই কাজ করে তার দরিদ্র পরিবারকে চালাত। তার মা দুরারোগে আক্রান্ত, মানুষের বাড়িতে কাজ করে চিকিৎসা চালান। আমরা এ ঘটনায় দায়িদের উপযুক্ত বিচার ও ক্ষতপূরণ চাই।
এ ব্যপারে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজনের মৃত্যুর খবর শুনে পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। শ্রীমঙ্গল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়টি এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের অবগত করেনি।
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে