জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার চরবাখরা গ্রামে সংঘটিত ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে মামলার অন্যতম আসামি মো. মেহেদী হাসান ওরফে চিকন আলীকে। গ্রেপ্তারের পর সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব।
গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার দক্ষিণ বস্তা আলমপুর গ্রামের বাসিন্দা রাশেদুল ইসলামের ছেলে।
২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর গভীর রাতে প্রায় ১২টা ৪৫ মিনিটে চরবাখরা গ্রামের বাসিন্দা কছিমদ্দিন ফকিরের বাড়িতে সংঘবদ্ধ একদল ডাকাত টয়লেটের ছাদ ভেঙে প্রবেশ করে। ডাকাত দলের সদস্যরা প্রথমেই বাড়ির লোকজনের হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং চলে ভয়াবহ নির্যাতন। পরিবারের সদস্যদের উপর চলে বেধড়ক মারধর। নির্যাতনের শিকার হন বাড়ির বৃদ্ধা রোকেয়া বেগম (৬৫), বড় ছেলে গোলাম মোস্তফা (৪২), নাতনি মিম্মা (১৫) ও ছোট ছেলের স্ত্রী মালা বেগম (২৫)। তাদের মধ্যে তিনজনকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং মালা বেগমকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
ডাকাত দল বাড়ি থেকে লুট করে নেয় প্রায় ১১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার মালামাল এরমধ্যে রয়েছে ৪টি বিদেশি জাতের গরু, ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে তাণ্ডব। ডাকাতির সময় বাড়ির ছোট ছেলে এরশাদ হোসেন বাইরে গভীর নলকূপ পাহারায় ছিলেন। তিনি জানান, ডাকাতরা তার স্ত্রীকেও শারীরিক নির্যাতন করেছে এবং পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে মারধর করেছে।
এলাকাবাসী জানান, চরবাখরা গ্রামে এ ধরনের ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা এর আগে ঘটেনি। প্রবীণ বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, ‘এত বড় ডাকাতি, এত সাহস নিয়ে কেউ ঘরে ঢুকে নির্যাতন করতে পারে, এটা কল্পনারও বাইরে ছিল ‘
ডাকাতির ঘটনার পরপরই কালাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মো. কছিমদ্দিন ফকির। তদন্তে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে জয়পুরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত ১৩ জুন আক্কেলপুর থানা এলাকা থেকে মেহেদী হাসান ওরফে চিকন আলী নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।
রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেপ্তারের পর মেহেদী হাসান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
একুশে সংবাদ/জ.প্র/এ.জে