মানুষ বেঁচে থাকার জন্য নানামুখী পেশায় নিয়োজিত। জীবনযুদ্ধে যারা কখনও হার মানেন না, তাদের একজন হলেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার জামাল মিয়া। প্রায় ২৫ বছর ধরে তিনি পানগুছি নদীর ওপর চলাচলকারী ফেরিতে বসে ঝালমুড়ি বিক্রি করে নিজের পরিবার চালিয়ে আসছেন।
জামাল মিয়ার বয়স এখন ৫৫ বছর। বাড়ি মোরেলগঞ্জ উপজেলারই এক গ্রামে। পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, পাঁচ কন্যা এবং এক পুত্র। পাঁচ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, একমাত্র ছেলে বর্তমানে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। এই বিপুল সংসারের ভরসা একমাত্র তার ফেরিতে বিক্রি করা ঝালমুড়ির আয়।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জামাল মিয়া ফেরিতে বসে নিজ হাতে ঝালমুড়ি তৈরি ও বিক্রি করেন। মুখরোচক এই খাবার তৈরিতে তিনি ব্যবহার করেন মুড়ি, চানাচুর, ছোলা, শশা, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচসহ নানা ধরনের মসলা। তার হাতের তৈরি ঝালমুড়ির কদর স্থানীয় যাত্রীদের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মাঝেও রয়েছে। এমনকি কখনও কখনও মন্ত্রী, সচিব পর্যায়ের ব্যক্তিরাও তার ঝালমুড়ির স্বাদ গ্রহণ করেছেন।
জামাল মিয়া বলেন,“২০০১ সাল থেকে আমি এই ফেরিতে ঝালমুড়ি বিক্রি করছি। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ শ` টাকা আয় হয়। এই আয় দিয়েই সংসার চালাই। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অনেক কষ্টে চলতে হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আগের মতো করে আর ঝালমুড়ি দেওয়া সম্ভব হয় না। এতে ক্রেতারাও অসন্তুষ্ট হন, কিন্তু কিছু করারও থাকে না।
জীবনের বাস্তবতা ও কষ্টের মাঝেও মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকা জামাল মিয়ার মতো মানুষেরা আমাদের সমাজের নীরব যোদ্ধা, যাঁদের জীবনসংগ্রামের গল্প সত্যিই অনুপ্রেরণার।
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে