গাজীপুরের কালীগঞ্জে মৃত্যুর ২০ মাস পর কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সুমন পালমা গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২৬ তারিখে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দড়িপাড়া এলাকার পবিত্র পরিবারের গির্জার কবরস্থান হতে মৃত সুমন পালমার মরদেহ অধিকতর তদন্তের জন্য উত্তোলনের আদেশ দেন গাজীপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাশ উত্তোলনের সময় মামলার বাদী অনুপস্থিত থাকায় মৃতের স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, ভাই-বোনসহ স্থানীয় জনসাধারণের আপত্তির কারণে আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও মরদেহ উত্তোলন করতে পারেনি। উপস্থিত উত্তেজিত স্থানীয় জনসাধারণ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বাদীর উপস্থিতি কামনা করে মৌখিক ও লিখিত ভাবে আবেদন করেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলন না করে স্থান ত্যাগ করেন গাজীপুর জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সহিদ উল্লাহ ।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মো. আশরাফুল ইসলাম, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেজাউল হক, দড়িপাড়া ধর্মপল্লীর প্রধান পুরোহিত ফাদার স্টেনিছ লাউজ গমেজ, আইনশৃঙ্খলার সদস্যবৃন্দ, মৃতের পরিবারের স্বজনরা, উৎসুক অত্র এলাকার শত-শত নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সহিদ উল্লাহ প্রতিবেদককে বলেন, মামলার বাদী অনুপস্থিত থাকায় এবং মৃতের পরিবারের স্বজন ও স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে লাশ উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।
মৃত সুমন পালমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সমর পালমা বলেন, মামলার বাদী বার্নাড রোজারিও আমার পরিবারের কেউ না। সে আমাদেরকে অহেতুক ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার জন্য একাজ করেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু প্রতিকার চাই।
মৃত সুমন পালমার স্ত্রী ঝুমুর পালমা প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্বামী সুমন পালমা পৌরসভার ভাদার্তী এলাকায় একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র রিহ্যাব পরিচালনা করতেন। সেদিন রাতে অসুস্থ হলে আমরা পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য কালীগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
একুশে সংবাদ / গা.প্র/এ.জে