চাকরি স্থায়ীকরণ, অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) চেয়ারম্যানের অপসারণসহ সাত দফা দাবিতে আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সোমবার (২ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলমান অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার ( ৩ জুন ) এই কর্মসূচি এখনও চলমান রয়েছে। নতুন কর্মসূচির অংশ হিসেবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্টেশন ত্যাগ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রের মোবাইল নম্বর সংশ্লিষ্ট সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (সিজিএম), জেনারেল ম্যানেজার (জিএম), ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ও সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) এর কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ জানান।
এদিকে, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) তাদের স্মারক নং ২৭.১২.০০০০.০০৩.০১.০০২.২৫.৭২, তারিখ ০২ জুন ২০২৫ অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের সার্বক্ষণিক স্টেশনে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অবনতি হলে তার দায় সম্পূর্ণরূপে বাপবিবোকে নিতে হবে, এতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়ী থাকবেন না।
চলমান আন্দোলন ২১ মে থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার ১৪তম দিনে পৌঁছেছে। এদিন সকাল থেকেই দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে সমাবেশে অংশ নেন। তাঁরা ‘চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাই’, ‘চাকরি মোদের স্থায়ী চাই’, ‘ন্যায্য দাবি মেনে নাও’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখর ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে দেশের ৮০টি সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন’ ও অনিয়মিতদের চাকরি নিয়মিতকরণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
সাত দফা দাবিতে বলেন:-
১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।
২. ‘এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন।
৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইনশ্রমিক ও পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।
৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫. গ্রাহকসেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন।
৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতি দ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ।
৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা।
আন্দোলনকারীরা আজও অভিযোগ করেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে তাঁরা কর্মসূচি আরও তীব্র করার ঘোষণা দিয়েছেন। শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ সময় সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুমন মিয়া সহ সকলেই উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/রাফি/বাবু/ এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
