ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-তে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার নামে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয় তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে লাইসেন্স দেওয়ার নামে ২,৫০০ থেকে ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হচ্ছিল। এসব অভিযোগ প্রথম ফাঁস করেন ইলেকট্রনিক্স ট্রেডের প্রশিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) বিষয়টি প্রকাশ করলে তা প্রশাসন ও দুদকের নজরে আসে।
ফেসবুক পোস্টে দেলোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন, বিআরটিএ অফিসের সঙ্গে সম্পৃক্ততা দাবি করে খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন এবং অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুল ইসলাম ঘুষ লেনদেনে জড়িত। তিনি আরও দাবি করেন, অর্থ না দিলে প্রশিক্ষণার্থীদের পরীক্ষায় ফেলিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগ প্রকাশের পর দেলোয়ার হোসেনকে শোকজ করেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান। এ প্রসঙ্গে দেলোয়ার বলেন, "সত্য বলায় আমাকে শোকজ করা হয়েছে, কিন্তু আমি যা বলেছি তার সবই প্রমাণযোগ্য।"
গত ৭ মে দুদকের একটি দল ঠাকুরগাঁও বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী জানান, "লাইসেন্স দেওয়ার নামে অর্থ নেওয়ার বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
অভিযোগ বিষয়ে ফারুক হোসেন বলেন, "আমি কোনো টাকা নেইনি। কিছু শিক্ষক ও ছাত্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।"
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান দাবি করেন, "কোনো প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। অভিযোগকারী যদি প্রমাণ দিতে না পারেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
প্রশিক্ষণার্থীদের অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ঘুষ না দিলে লাইসেন্স মেলে না, সরকারি অনুদানও ঠিকমতো পাই না। প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়ম চলছে।”
স্থানীয় সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীরা এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
একুশে সংবাদ /ঠা.প্র/এ.জে