ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। ‘মা মা’ বলে সারারাত ডাকাডাকির পর সোমবার সকালে জালালপুর পূর্বপাড়ার একটি বাড়ির পাশের সড়ক থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের (বয়স আনুমানিক ৩০) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, নজরুল ইসলামের বাড়ির পেছনের সড়কে যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। কোনো স্বজন বা পরিচিতজনের খোঁজ না পাওয়ায় পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় জালালপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ভিডিবি ইউনিয়নের দলপতি আশিকুর রহমান বলেন, গত ২০ মে জালালপুর জোড়া ব্রিজের সামনে ওই যুবকের সঙ্গে দেখা হয়। তার নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করলেও তিনি কিছুই বলেননি। খাবারের কথা জিজ্ঞেস করলে মাথা নাড়িয়ে সাড়া দিতেন। গায়ে চামড়া ছাড়া কিছুই ছিল না, খুবই অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের থেকে জেনেছি—তিনি এর আগে তালিনা গ্রামে অবস্থান করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো এক সময় তাঁকে ফেলে যাওয়া হয়েছে এবং এরপর থেকে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন।
রবিবার রাতে নজরুল ইসলামের বাড়ির পেছনে গিয়ে তিনি শুয়ে পড়েন এবং সারারাত “মা মা” বলে ডাকতে থাকেন। ভোরে এলাকাবাসী তাঁর নিথর দেহ দেখতে পান।
এ খবর পেয়ে তালসার পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) তবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। তিনি জানান, “লোকটি প্রায় ২০-৩০ দিন ধরে বিভিন্ন সড়কে পড়ে থাকতেন। ছিলেন প্রচণ্ড অসুস্থ, খেতে পারতেন না, হাঁটাও পারতেন না—হামাগুড়ি দিয়ে চলতেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে। এখনও পর্যন্ত তার কোনো পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।”
তিনি আরও জানান, মরদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত কেউ তার খোঁজ নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে শোক ও কৌতূহল বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, এর আগে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৮ দিন চিকিৎসা নিয়ে এক অজ্ঞাত ৬০ বছর বয়সী নারী মারা যান। পরে তাঁর মরদেহ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে