রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের চাঁদপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা কামরুজ্জামানকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির প্রধানকে বাতিল করা হয়েছে এবং স্কুলের জমি লিজ বন্ধের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার চাঁদপুর গ্রামের জমি দাতার স্বজন এরাজ আলী বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক আবু হেনা ও তদন্ত কমিটির প্রধান প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়াজেদ আলীকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহীর নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জমি লিজ নিয়োগ ও বানিজ্যসহ প্রায় আট কোটি ৫০ লাখ টাকার অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে প্রধান শিক্ষক হেনার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল।
অভিযোগের তদন্ত শেষ না করে প্রধান শিক্ষক ও এডহক কমিটির সভাপতির যোগসাজশে আগামী ২৭ মে প্রায় ২৭ একর জমিসহ পুকুর লিজ দেয়ার মর্মে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে শুরু হয়েছে নানা রহস্য ও প্রশ্ন। সরেজমিনে স্কুল ও এলাকাবাসী এবং জমি দাতারা তদন্তের দাবি তুলেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার প্রধান ছিলেন প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা। তদন্ত কমিটির প্রধান গত ১৭ মে স্কুল প্রাঙ্গণে তদন্ত অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য নোটিশ দেন, কিন্তু রহস্যজনক কারণে নির্ধারিত দিনে তদন্ত করা হয়নি। ১৫ মে তিনি পুনরায় নোটিশ দেন, কিন্তু তারিখ না থাকায় তা গ্রহণ করা হয়নি। এরপর প্রধান শিক্ষক ও তদন্ত কমিটির প্রধান প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা দপ্তরে বসে ২৬ মে তদন্ত করার পরিকল্পনা করেন, যা আইনের পরিপন্থী।
অভিযোগকারী এরাজ উদ্দিন জানান, প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। গত সময়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও সঠিক তদন্ত হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষকের পরিবারের আয় ও সম্পদের পার্থক্য অনুসারে দুর্নীতির ইঙ্গিত রয়েছে। স্থানীয়দের দাবী, তদন্ত কমিটি পরিবর্তন করে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা হোক।
প্রধান শিক্ষক আবু হেনা কামরুজ্জামান মোবাইলে বলেন, “অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন, তদন্ত চলাকালীন কাজ বন্ধ রাখা সম্ভব নয়।” তিনি জানান, ইউপি বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান এডহক কমিটির সভাপতি, তবে তাকে নিয়ে নানা কথা রয়েছে।
বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান জানান, আগামী ২৭ মে জমি লিজ দেয়া হবে, তবে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আগে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. ওয়াজেদ আলী ফোন করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমান বলেন, “তদন্ত যেকোনো স্থানে করা হতে পারে। সঠিক তদন্ত না হলে তদন্ত প্রতিবেদন বাতিল করা হবে।”
একুশে সংবাদ/ রা.প্র /এ.জে