নেত্রকোনার মদন উপজেলায় নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে এক ইমামের চুল ও দাড়ি কেটে দেওয়ার ঘটনায় ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ভুক্তভোগী ইমাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা দেন।
ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার (১৯ মে) রাতে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাগজান গ্রামে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই রাতেই ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ ও জামির উদ্দিনসহ ৩-৪ জন মিলে এক নারী সংক্রান্ত ঘটনায় স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে তাকে চুল ও দাড়ি কেটে দেন। পরে পরিবারের সদস্যদের ডেকে এনে ইমামকে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী ইমাম জেলার আটপাড়া উপজেলার গাতীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০২০ সাল থেকে বাগজান গ্রামের মসজিদটিতে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ এবং তাবলীগ জামাতের সাদপন্থী সফর উদ্দিন তাকে মসজিদ থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। শুক্রবারের বয়ানসহ নানা ধর্মীয় বক্তব্যে তিনি কিছু মহলের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। অবশেষে ষড়যন্ত্রকারীরা এক নারীকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণচেষ্টা’র অভিযোগ এনে ‘বিচার’ নামের শাস্তি দিয়ে তার চুল ও দাড়ি কেটে দেয়।
ভুক্তভোগী ইমাম বলেন, "আমি অনুরোধ করেছিলাম নবীর সুন্নত দাড়িতে হাত না দিতে। কিন্তু তারা আমার চুল-দাড়ি জোর করে কেটে দেয়। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।"
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ বলেন, “স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ইমামের ওপর হামলা করতে যাচ্ছিল। আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। শুনেছি ইমাম ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ করেছিলেন। তবে চুল-দাড়ি কাটার ঘটনায় আমি জড়িত নই।"
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান মাস্টার বলেন, “ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। একজন ইমামের সঙ্গে এমন আচরণ সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদিলুজ্জামান বলেন, “এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছি। থানাকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/ নে.প্র /এ.জে