বাড়তি আয় বাড়াতে বাগানে গাছের ফাঁকে সারা বছরই বিভিন্ন ফসল ফলান মোহাম্মদ আলী ও তার পূত্র তুহিন। বাড়ির পাশে রয়েছে একখণ্ড জমি। সেখানে আম, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপে ও উন্নতজাতের বড়ইসহ নানা ফলফলাদির গাছ লাগিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এবার তিনি এক হাজার বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। গত সিজনে কম পরিমাণে বস্তায় আদা চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। তাই এ বছরে বস্তায় আদা চাষে জনপ্রিয়তা বেড়েছে কালীগঞ্জের কৃষকদের মাঝে ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাঁচটি এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। গাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে বস্তা। তাতে চাষ হচ্ছে আদা। ইতিমধ্যে আদার কন্দ হতে অঙ্কুর বের হয়ে বড় হয়েছে। ফলন আসতে সময় লাগবে তিন মাস।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বছরে দেশে আদার চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন এবং দেশে উৎপাদন হয় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। ঘাটতি পূরণে ব্যাপক ভাবে আদা চাষের কোনো বিকল্প নেই।
উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের শষী মার্কেট এলাকায় বস্তায় আদার চাষ করেছেন মোহাম্মদ আলী। তিনি প্রতিবেদককে জানান, ইউটিউবে দেখে প্রথম বস্তায় আদা চাষ করতে অনুপ্রাণিত হন। প্রথমে বস্তায় পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার, বেলে দোআঁশ মাটি ও ছাই দিতে হয়। একেকটি বস্তায় ২০ থেকে ২৫ কেজি মাটি দিতে হয়। পরে তাতে বীজ আদা রোপণ করতে হয়।
একেকটি বস্তায় তিনটি চারা রোপণ করা উত্তম। আদা চাষে বেশি পরিচর্যা বা পরিশ্রম লাগে না। আর বস্তা পদ্ধতিতে করলে আগাছা জন্মায় কম। পুকুরপাড় বা অন্য গাছের মাঝখানে আদা চাষ করা যায়। এবার ভাল ফলন হলে সামনের বছর বস্তার পরিমাণ বাড়ানো হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম প্রতিবেদককে জানান, এ বছর উপজেলায় মোট ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করার টার্গেট রয়েছে। আদার কন্দ পচা রোগ আদার একটি মারাত্মক সমস্যা। তাই বস্তায় আদা করলে এ রোগ ছড়াতে পারে না। অল্প জায়গায় চাষ করা যায়। আম, কাঁঠাল, মাল্টা, পেঁপে, লিচুসহ অন্যান্য ফলবাগানের মধ্যেও চাষ করা যায়। আদা আধো আলো আধো ছায়ায় ভালো হয়। বস্তায় সার ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করলে প্রতি বস্তা থেকে এক কেজি থেকে সর্বোচ্চ তিন কেজি ফলন পাওয়া সম্ভব। কৃষি অফিস হতে সার, বীজ ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সাহায্য করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে