নওগাঁর মান্দায় শত্রুতার জেরে গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল এক দরিদ্র পরিবারের গোয়ালঘর। এতে একটি গাভীন গরু, একটি বড় ছাগল এবং প্রায় ৮-১০টি হাঁস-মুরগি পুড়ে মারা যায়। গোয়ালঘরের পাশে পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া অবশিষ্টাংশ, নিস্তব্ধ সেই জায়গায় বারবার ছুটে যাচ্ছেন গৃহস্থ মোসলেম আলী সরদার (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৫২)। চোখে মুখে শোক আর অসহায়ত্বের ছাপ।
ঘটনাটি ঘটেছে মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নহলা কালুপাড়া (ভুতপাড়া) গ্রামে। অগ্নিকাণ্ডের শিকার মোসলেম আলী সরদার জানান, তার প্রায় দুই লাখ টাকার সম্পদ—যার মধ্যে ছিল একটি ৫ মাসের গর্ভবতী গরু, একটি বড় ছাগল ও বেশ কিছু হাঁস-মুরগি—একইসাথে আগুনে পুড়ে মারা গেছে।
ভিকটিম পরিবারের দাবি, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং শত্রুতামূলক আগুন দিয়ে প্রাণীগুলোকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ঘটানো হয়েছে। বিষয়টি তারা থানায় অভিযোগ করেছে। ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত এএসআই এরশাদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি, স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি, ঘটনাটি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এদিকে, প্রতিবেশীরাও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ভোরের দিকে আগুন লাগে, আমরা ছুটে গিয়ে মোটরের পানি দিয়ে চেষ্টা করে আগুন নিভিয়েছি, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।”
মাহফুজা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন,“প্রাণীগুলোকে ছেলের মতো লালন-পালন করতাম। কে এমন শত্রুতা করলো? বিচার চাই।”
মোসলেম আলী সরদার বলেন,“আমার গরুগুলোকেই যদি পুড়িয়ে মারতে হয়, তাহলে আমাকে আগেই মেরে ফেললেই ভালো হতো।”
ঘটনার খবর পেয়ে তাদের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান গোলাপ ঢাকা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। বাবামায়ের সান্ত্বনায় তিনি বলেন,
“আমার বাবা-মা প্রাণীগুলোকেই সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। তারা মানসিকভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছেন। আমরা চাই, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হোক।”
এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

