রাজশাহীর তানোরে সরকারিভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বিতরণকৃত গরুগুলো রুগ্ন ও নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। উপকারভোগীরা বলছেন, সরকারি প্রকল্পের এই গরু বিতরণ প্রক্রিয়া দুর্নীতির মাধ্যমে গরিবদের হক লুটে নেওয়ার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
জানা যায়, সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি তানোর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ৮০ জন উপকারভোগীর মাঝে গরু, পশুখাদ্য ও ফ্লোর ম্যাট বিতরণ করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিনটেক এন্টারপ্রাইজ এসব গরু সরবরাহ করে।
উপকারভোগীরা অভিযোগ করেছেন, সরকারি টেন্ডার অনুযায়ী প্রতিটি গরুর বয়স হওয়া উচিত ছিল কমপক্ষে দেড় বছর এবং ওজন ১০০ কেজির বেশি। কিন্তু বাস্তবে বিতরণ করা অধিকাংশ গরুর বয়স ছিল এক বছরের কম, ওজন ৫০-৬০ কেজির মধ্যে এবং অনেক গরু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
স্থানীয়দের দাবি, বেশ কিছু গরু লামিস্কীন (গুটিবসন্ত) রোগে আক্রান্ত ছিল। এসব গরুর ওজন ও স্বাস্থ্য এতটাই খারাপ যে উপকারভোগীরা এগুলো পালন করে লাভের পরিবর্তে আরও ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়াজেদ আলী অভিযোগের আংশিক সত্যতা স্বীকার করে বলেন,"সব গরু নয়, কিছু গরুর ওজন কম ছিল এবং একটি গরুতে লামিস্কীন রোগ পাওয়া গেছে।"
তবে তিনি টেন্ডার, বরাদ্দ কিংবা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
গরু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জিনটেক এন্টারপ্রাইজ বা তাদের মালিক দাস বাবু-র সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সরবরাহ কাজে যুক্ত শাহিন নামের একজন বলেন,"দাস বাবু ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে গরু কিনে এসব সরবরাহ করেছেন।"
স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। তারা এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গণমাধ্যমকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে গরু বিতরণ করায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
একাধিকবার এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটায় প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে গরিবের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা লুট করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে