কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণ, নিগ্রহ ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে দুই ভাই—শাহ পরান ও ফজর আলীর পুরনো বিরোধ। ছোট ভাই শাহ পরান তার বড় ভাই ফজর আলীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে এই ঘটনা সাজান বলে জানিয়েছে র্যাব।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে শাহ পরান পরিকল্পিতভাবে জনতা তৈরি করে ভাই ফজর আলীকে ফাঁসাতে নারী নিগ্রহের ঘটনাটি ঘটান এবং অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।”
র্যাব জানায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের শহিদের দুই ছেলে ফজর আলী ও শাহ পরান একসময় একই নারীর প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। দুই মাস আগে এই নিয়ে শালিস বৈঠকে বড় ভাই ফজর আলী জনসম্মুখে ছোট ভাই শাহ পরানকে চড় মারেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন শাহ পরান।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে নেওয়া ৫০ হাজার টাকার সুদের দাবিতে ফজর আলী সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করেন। এর ২০ মিনিট পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহ পরান ইমোতে বার্তা দিয়ে গ্রামবাসীর কিছু অংশকে জড়ো করেন এবং তাদের নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ভুক্তভোগীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও শ্লীলতাহানির পর ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক মাধ্যমে।
এই ঘটনায় ফজর আলীসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। তবে তদন্তে মূল হোতা হিসেবে উঠে আসেন শাহ পরান।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর শাহ পরানসহ অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং পলাতকদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামে ওই নারী নিগ্রহের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ২৯ জুন ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ//ঢা.প//র.ন