AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আদমদীঘিতে বন্ধ হয়ে গেছে ২৩০ হাসকিং চাতাল মিল


Ekushey Sangbad
পবিত্র কুমার, বগুড়া
০৮:৫৯ পিএম, ১১ মে, ২০২৫

আদমদীঘিতে বন্ধ হয়ে গেছে ২৩০ হাসকিং চাতাল মিল

শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা। এই উপজেলার প্রধান ফসল ধান। ধান থেকে উৎপন্ন চাল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। এক সময় ধান সংগ্রহের পর চাতালে শুকিয়ে চাল প্রক্রিয়া জাত করা হতো। এগুলোকে বলা হতো হাসকিং মিল বা চাতাল। শুধু চালই নয়, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বহু শস্য শুকানো হতো চাতালে।

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ধান ও চালের মূল্য এবং অটো রাইস মিলের দাপটের কারণে লোকসানে পড়ে এসব হাসকিং চাতালগুলো বিলুপ্তির পথে।

বিগত ৯০’র দশকেও ছিল এ উপজেলায় প্রায় ২৮০টি হাসকিং চাতাল মিল। কিন্তু কালের বির্বতনে এসব হাসকিং চাতাল মিল কমতে কমতে হাতে গোনা মাত্র ৩টি হাসকিং চাতাল চালু রয়েছে। অনেকে এসব চাতাল মিল ভেঙে গড়ে তুলছেন বাসা-বাড়ি, দোকানপাট। আবার কেউ কেউ গড়ে তুলছেন গরুসহ হাঁস-মুরগি, ছাগলের খামার। এমন চিত্র দেখা যায় পুরো আদমদীঘি উপজেলাজুড়ে।

জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় দেশের সর্ববৃহৎ খাদ্যগুদাম ‘সান্তাহার সিএসডি ও সাইলো’অবস্থিত। ১৯৮০ সালের দিকে শস্যভাণ্ডার খ্যাত এ উপজেলার আদমদীঘি সদর, সান্তাহার, নসরতপুর, চাঁপাপুর, কুন্দগ্রাম, ছাতিয়ান গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার চাল ব্যবসায়ীরা ধান সিদ্ধ ও মাড়াইয়ের জন্য বয়লার হাসকিং মিল বা চাতাল নির্মাণ করেন। সে সময় চাতাল মালিকরা ধান-চালের এই ব্যবসায় প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছেন। যার ফলে আদমদীঘিতে একে একে গড়ে ওঠে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান।

আদমদীঘি উপজেলা সদরের হাস্কিং চালকল মালিক মেছের আলী জানান, অটো রাইস মিলগুলো দিনে তিন হাজার মেট্রিক টন ধান থেকে চাল উৎপন্ন করতে পারে। সেখানে হাস্কিং চাল কলগুলোতে ১০ টনের বেশি ধান থেকে চাল উৎপন্ন করা যায় না। উৎপাদন ক্ষমতার এই বিশাল ব্যবধানের কারণে তাল মেলাতে না পেরে ও মূলধন হারিয়ে একের পর এক মিল ও চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব হাসকিং মিল চাতালে আগে প্রায় ৭ হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত।

পরবর্তীতে চাতাল মালিকরা ব্যবসা বড় করতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। ২০০০ সালের পর এ উপজেলায় অটো রাইস মিল স্থাপন শুরু হয়। তখন চাতাল মালিকদের সঙ্গে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। তবে অটো রাইস মিলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চাতাল মালিকরা প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারার কারণে মূলধন হারিয়ে চাতাল ব্যবসা বন্ধ করতে শুরু করেন। আদমদীঘির অটো রাইস মিল ব্যবসায়ী মোত্তাকিন তালুকদার জানান, আমারও আগে হাসকিং চাতাল মিল ছিল। বর্তমানে আমার দুটি অটো রাইস মিল রয়েছে। ধানের দাম ও লেবার সংকটের কারণে আমরাও এ পেশায় টিকতে হিমশিম খাচ্ছি। 
এছাড়া হাসকিং চাতালে প্রতিদিন ৭৫ কেজি ওজনের ১৪০ বস্তা ধান প্রয়োজন হয়। পক্ষান্তরে অটো রাইস মিলে প্রতিদিন ৩ হাজার মেট্রিক টনের অধিক ধান প্রয়োজন হয়। উৎপাদন ক্ষমতার এই বিশাল ব্যবধানের কারণে মূলধন হারিয়ে একের পর এক হাসকিং চাতাল মিল বন্ধ হয়ে গেছে এবং আমাদেরও ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রব্বানী জানান, অটো রাইস মিলের সংখ্যা বৃদ্ধি, ধানের মূল্য বেড়ে যাওয়া ও মূলধন হারিয়ে অনেক চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় ২৩০টি চাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব চাতালের মধ্যে ১৭৮টি একেবারে বন্ধ ও ৫২টি সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক চাল সরবরাহ করতে না পারায় তাদের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে।

বর্তমানে উপজেলায় ৩-৪টি হাসকিং মিল বা চাতাল এবং ১৫টি অটো রাইস মিল চালু রয়েছে।
 

 

একুশে সংবাদ/ব.প্র/এ.জে

Shwapno
Link copied!