আজ ২৫ বৈশাখ, বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী কবি ও নোবেলজয়ী সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করতে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসর গ্রামের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বইছে উৎসবের আমেজ। তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনে রয়েছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলা।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধু একজন কবি নন, তিনি ছিলেন মানবতাবাদী দার্শনিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, সংগীতজ্ঞ এবং চিন্তাশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক। বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ ঘটানো এই মহান ব্যক্তি একসময় পতিসরের এই কুঠিবাড়িতে বসেই জমিদারি দেখভালের পাশাপাশি রচনা করেছেন অসংখ্য গান, কবিতা ও গল্প।
পতিসরের কাছারি বাড়ি এখন যেন শুধুই স্মৃতি নয়—একটি জীবন্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে বৃহস্পতিবার (৭ মে) থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের অনুষ্ঠানের প্রথম দিন। ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা দিয়ে সূচনা হয়েছে উৎসবের। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বিপিএম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, অধ্যক্ষ ড. মো. বেলাল গেহাসেন এবং সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আলম। সভাপতিত্ব করছেন নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আয়োজিত এ উৎসবে দেবেন্দ্র মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে লোকজ সংস্কৃতি প্রদর্শনী ও গবেষণা আলোচনা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে রবীন্দ্রসংগীত, আবৃত্তি ও নাট্য পরিবেশনা। স্থানীয় শিল্পীরা ছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি, আত্রাই ও রাণীনগরের শিল্পীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হচ্ছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন।
পাশাপাশি স্থানীয় কলেজ মাঠে আয়োজন করা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘রবীন্দ্র মেলা’। যেখানে রয়েছে মাছের মেলা, জামাই মেলা, নাগরদোলা, সাকার্স, কথপে মোটরসাইকেল খেলা সহ শিশুদের জন্য নানা বিনোদনের ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৯১ সালে তিনি প্রথমবারের মতো পতিসরে আগমন করেন এবং জীবনের শেষবার ১৯৩৭ সালের ২৭ জুলাই এখানে আসেন।
এই উৎসব শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ নয়—এটি বাংলা সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা এবং ঐতিহ্য রক্ষারও এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :