চলতি বোরো মৌসুমে শেরপুর জেলায় ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় গভীর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জেলার কৃষকরা। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পরও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান ভালো হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রতি বিঘায় ২০-২২ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছে। তবে বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০০ থেকে ১০৫০ টাকায়, যেখানে বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক মজুরি মিলিয়ে উৎপাদন খরচ প্রায় সমান বা কখনও তার চেয়েও বেশি।
লতারিয়া ও সন্ন্যাসীরচর গ্রামের কৃষকরা জানান, “এবার ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু ধানের দাম নাই। ফলন দিয়েও খরচ উঠছে না। ফলে ঋণগ্রস্ত হচ্ছি।”
অন্যদিকে, কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে সেই কার্যক্রম এখনও সব এলাকায় পূর্ণমাত্রায় শুরু হয়নি। অনেক কৃষকের অভিযোগ, সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। মধ্যস্বত্বভোগীরাই বেশি লাভবান হচ্ছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যেন প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকেই ধান সংগ্রহ করা যায়। তবে প্রক্রিয়া কিছুটা সময়সাপেক্ষ।”
কৃষি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কৃষকের উৎপাদন খরচের তুলনায় ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে তারা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কৃষকরা সরাসরি সরকারি ক্রয় কেন্দ্র থেকে ধান বিক্রির সুযোগ ও বাজারে মনিটরিং জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন, যেন কৃষকরা তাদের ন্যায্য মূল্য পায় এবং টিকে থাকতে পারে।
একুশে সংবাদ/শে.প্র/এ.জে