নওগাঁর মান্দায় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নানকে গণধোলাইয়ের শিকার হতে হয়েছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা তাকে সতীহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় আটকিয়ে গণধোলাই দেন।
অভিযোগ রয়েছে যে, আব্দুল মান্নান এবং সমিতির সম্পাদক শাহিন আক্তার মিঠু গ্রাহকদের কাছে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে এফডিআরের নামে আমানত সংগ্রহ করেন। শুরুর দিকে মুনাফার টাকা ঠিকমতো পরিশোধ হলেও পরে তারা টালবাহানা শুরু করেন এবং শেষ পর্যন্ত সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
অতিরিক্ত সূত্র থেকে জানা যায়, সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক লাখপতি অফারের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। প্রত্যেক গ্রাহকের সাথে এক লাখ টাকায় মাসে দুই হাজার টাকা মুনাফার চুক্তি হয়েছিল। তবে গত ছয় মাস ধরে গ্রাহকদের মুনাফা ও মূল টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।
এ ঘটনায় এক গ্রাহক ফারমিন আক্তার বলেন, "গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পর মাসের পর মাস মুনাফা না দিয়ে তারা সময়ক্ষেপণ করছিলেন। এখন সংস্থার লোকজন কোথাও আত্মগোপন করেছেন।"
অপর গ্রাহক মোহাম্মদ আলী জানান, "মুনাফা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন আর কিছুই পাচ্ছি না।"
আব্দুল মান্নান এই ঘটনা সম্পর্কে জানান, "গ্রাহকদের টাকা মাঠে পড়ে আছে এবং যারা ঋণ নিয়েছেন তারা টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। আমরা টাকার জন্য মাঠে কাজ করছি এবং যেভাবে টাকা উঠে আসবে, তা ফেরত দেয়া হবে।"
স্থানীয় গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল জানান, "গ্রাহকরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের টাকা ফেরতের জন্য অভিযোগ করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আজ তারা আব্দুল মান্নানকে ধরে গণধোলাই দিয়েছে।"
মান্দা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ বলেন, "কিছুদিন ধরে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, যা সঠিক নয়। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া তাদের অধিকার।"
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান জানান, "এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
একুশে সংবাদ/বিএইচ



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

