AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মৌলভীবাজারে বাবার হাতে ৭ বছরের শিশু সন্তান খুন


Ekushey Sangbad
এহসান বিন মুজাহির, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
০১:০৩ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মৌলভীবাজারে বাবার হাতে ৭ বছরের শিশু সন্তান খুন

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদকাসক্ত এক বাবার হাতে ৭ বছরের শিশু সন্তান খুন হয়েছেন। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহত শিশুর নাম মাহিদ। ঘাতক পিতার খোকন মিয়া। ঘটনার পর শিশুর বাবা ও দাদি হাওয়া বেগম নিজ ঘরে লাশ রেখে গাঁ ঢাকা দিলেও পুলিশী অভিযানে ঘাতক পিতাকে আটক করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই ঘটনায় সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে খোকন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৌলভীবাজার থানা আনা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোকন মিয়া একজন মাদক ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। রবিবার বিকেলে খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া শিশু মাহিদ বিছানায় মল ত্যাগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের বাহিরে এনে ব্যাপকভাকে মারধর করেন পিতা খোকন মিয়া।

এক পর্যায়ে শিশু মাহিদ সেখান থেকে পালিয়ে প্রতিবেশি জবেদা খাতুন এর ঘরে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে ধরে এনে উপর থেকে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। এরপর শিশু মাহিদের দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারে সাথে আছাড় দিতে থাকলে শিশু মাহিদের নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ সময় প্রতিবেশি জবেদা বেগম শিশুটিকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে ব্যর্থ হন। এমন পরিস্থিতিতে শিশুটির অবস্থ সংকটাপন্ন হওয়া খোকন মিয়া নিজেই শিশু মাহিদকে নিয়ে হাজির হন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার হীন চেষ্টা করে ঘাতক পিতা খোকন মিয়া। গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করেন। এরপর  শিশুর লাশ হাসপাতাল বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পালিয়ে যান ঘাতক খোকন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সদর মডেল থানা পুলিশ উপস্থিত হলেও সেখানে নিহতের লাশ ও খোকন মিয়াকে পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণ পর লাশ নিয়ে খোকন বাড়িতে উপস্থিত হয়ে সেখানে লাশ রেখেই পালিয়ে যান। তবে তার প্রথম স্ত্রী ও নিহত শিশু মাহিদ এর আরেক ভাইকে ঘরেই পাওয়া যায়। আশপাশে খোঁজাখুজি করে পুলিশ সেখানে খোকন ও শিশুর দাদি হাওয়া বেগমের কোন খোঁজ না পেয়ে অভিযান চালিয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রতিবেশি জবেদা বেগম জানান, শিশুর দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারের সাথে মাথায় আঘাত করতে থাকলে একপর্যায়ে তাঁর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। এসময় আমি উদ্ধারে এগিয়ে গেলে আমাকে অন্তত ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দেয়। এসময় অন্য কোনো লোকজন না থাকায় আর কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি।

জানা যায়, ১৫ বছর আগে প্রথম স্ত্রী রেখে তানিয়া আক্তার নামে এক নারীকে বিবাহ করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেন খোকন। ওই স্ত্রীর সাথে মনোমালন্য হওয়ায় কয়েক বছর আগে স্বামী খোকন মিয়াকে ছেড়ে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও মাহিদ ও রাফিদ নামে ৬ ও ৭ বছর বয়সী দুই শিশুকে রেখে দেন খোকন। এরপর থেকে মা ছাড়া বাবা খোকন মিয়ার কাছেই থাকত দুই শিশু।

স্থানীয়রা বলছেন অনেক দিন যাবত তুচ্ছ কারণে তাদের দুই ভাইয়ের প্রতি অমানবিক নির্যাতন চালাতেন মাদকাসক্ত বাবা খোকন মিয়া। নির্যাতনের নির্মম দৃশ্য প্রতিবেশির চোখে ধরা পড়লেও ভয়ে তাদের কেউ এগিয়ে আসার সাহস করেনি।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান জানান, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ
 

Shwapno
Link copied!