কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক পদায়নে অসম বন্টনের কারনে শিক্ষা ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এই বৈষম্যের কারনে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে বিদ্যালয় পর্যবেক্ষণ ও এলাকাবাসীরা জানায়, পৌরসভা, তুমলিয়া, জামালপুর ও মোক্তারপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদায়নের বৈষম্যপূর্ণ অবস্থা রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিক্ষক,ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতির সংখ্যা তুলনামূলক কম, কর্তৃপক্ষের তদারকির ঘাটতি, সৃষ্ট পদের বিপরীতে অতিরিক্ত একাধিক শিক্ষক পেশনে কর্মরত থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো দেখা যায়, তুমলিয়া ইউনিয়নের রাঙামাটিয়া, তুমলিয়া বালক, তুমলিয়া বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক বেশী। তবে ছাত্র সংখ্যা খুবই কম এমন তালিকায় শিমুলিয়া, তুমলিয়া কমিউনিটি, ঈশ্বরপুর হাজি খোঁদে নেওয়াজ, পশ্চিম খলাপাড়াসহ বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
তুমলিয়া সরকারি (কমিউনিটি), শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদ্য জাতীয়করণ কৃত বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি ২০/৩০ জনের চেয়েও কম। অভিভাবক ও সুশিল সমাজের আশঙ্কা প্রশাসন এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে প্রাথমিক শিক্ষা মুখ থুবড়ে পড়বে। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ বলে তারা মনে করেন।
বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম অথচ শিক্ষকের সংখ্যা অধিক থাকায় পড়াশোনার চেয়ে শিক্ষকরা গল্প আড্ডায় অলস সময় কাটাচ্ছে। তাছাড়া অধিকাংশ স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরাই দায়িত্বপালন করছে।
বেশ কিছু বিদ্যালয়ে সৃষ্ট পদের বিপরীতে অতিরিক্ত একাধিক শিক্ষক পেশনে কর্মরত রয়েছেন। যদিও শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হারে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রয়োজন নেই। উপজেলায় এমন শতাধিক শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলোতে। অথচ মোক্তারপুর, জাঙ্গালিয়া ও জামালপুর ইউনিয়নের স্কুলগুলোতে রয়েছে শিক্ষক সংকট।
প্রাথমিক শিক্ষায় চরম অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক পদায়নে চরম অসম বন্টনের কারনে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করছে অভিভাবক ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন্নাহার জেলা অফিসে মিটিং-এ ব্যস্ত থাকার কথা বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মাসুদ ভূইয়া প্রতিবেদক জানায়, শিক্ষায় অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষকদের অসম বণ্টনের বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি তাই সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
প্রাথমিক শিক্ষায় অব্যবস্থাপনা ও বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদায়নে অসম বন্টনের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম ইমাম রাজী টুলু প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের লক্ষ্যে আমি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করব।
এবিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এম.পি`র মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিঁনি ফোন রিসিভ করেন নি।
একুশেসংবাদ/বিএইচ