AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নানাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে সরকারি চাকুরি করছেন নাতি


Ekushey Sangbad
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি, বগুড়া
০৫:৩৭ পিএম, ৪ এপ্রিল, ২০২৪
নানাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে সরকারি চাকুরি করছেন নাতি

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জগদীশ গ্রামের মৃত নিজামুদ্দিন আকন্দের ছেলে আবুল কাশেম আকন্দ নিজ নানাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পোষ্য কোটার জাল সনদ দাখিল করে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে সরকারি চাকরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণি পদ মর্যাদার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। এদিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিতর্কিত ওই সনদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একই উপজেলার আটমুল(পইয়াগাড়ী) গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়,জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক,দুদক ও জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, সম্পূর্ণ জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য কোটায় চাকরি নিতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন আবুল কাশেম। তিনি নিজের মাতা সাহার বানুকে শিবগঞ্জের আটমুল কুঞ্ছিথল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নবিরউদ্দিন আকন্দের কন্যা এবং নিজেকে নাতি বানিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাক্ষর জাল করে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য কোটায় অবৈধপন্থায় চাকরি নিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধার বংশের কেউ না হয়েও পোষ্য কোটার জাল সনদ তৈরী করে আবুল কাশেম সর্বপ্রথম ২০১৩ সালের ১২ আগষ্টে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলায় যোগদান করেন এবং সেখান থেকেই সর্বপ্রথম সরকারি বেতনভাতা নেওয়া শুরু করেন। এখন বর্তমানে তিনি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত আছেন। এবিষয়ে অভিযোগকারী কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসে আবুল কাশেমের প্রকৃত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলেও আবুল কাশেম উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তথ্য গোপন রেখেছেন বলে জানা যায়।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, মুক্তিনামা-১৬৬৬-০১১০০০০৫১৩৫ নম্বর গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীরউদ্দিন আকন্দের সাথে অভিযুক্ত আবুল কাশেমের নানার নামের কোনো মিল নেই৷ মুক্তিযোদ্ধা নবীরউদ্দিনের ওয়ারিশ হিসাবে স্ত্রী আছিমন বিবি,এক মেয়ে আনেছা বিবি ও এক ছেলে আনিছুর রহমান রয়েছে। অভিযুক্ত আবুল কাশেমের প্রকৃত নানার নাম নজরুল ইসলাম।নানার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্য ৯ জন। এক স্ত্রী রাবেয়া,পাঁচ মেয়ে-সাহার বানু,আফিয়া,নার্গিস,

মোরশেদা,নাদিরা,তিন ছেলে-মোঃ আতাউল হক,মোঃ আলম মিয়া ও মোঃ আজম আলি রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা নবীরউদ্দিনের বংশের সঙ্গে আবুল কাশেমের নানার বংশে কোনো যোগসূত্র নেই।তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নবীর উদ্দিনের নাম ও ঠিকানা জালিয়াতি করে নিজ নানা নজরুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে জাল সনদ তৈরী করে সরকারি চাকরি হাতিয়ে নিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছেন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীরউদ্দিন ও তার পরিবার।

জাল সনদ ব্যবহার করে সরকারি চাকুরি নেওয়া আবুল কাসেম সম্পর্কে জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা নবীরউদ্দিন আকন্দ জানান, সাহার বানু না তাঁর ঔরসজাত মেয়ে না আবুল কাশেম তাঁর নাতি।সনদ জালিয়াতি করে আবুল কাশেম ঘোরতর অপরাধ করেছে এবং তার মান ক্ষুন্ন করেছে।রাষ্ট্রের অর্থ আত্মসাৎ করার অপরাধে তার বিচার দাবি করেছেন নবীরউদ্দিন। 

এ বিষয়ে আটমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, আগে কিভাবে আবুল কাশেম ওয়ারিশান সনদ নিয়েছে তা আমার জানা নেই।আমার সই করা এখনকার দুটি ওয়ারিশান সনদের তথ্য সঠিক। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি আবুল কাশেম মুক্তিযোদ্ধা নবীরউদ্দিনের বংশের কেউ না।

মুক্তিযোদ্ধার কোনো সনদ না থাকা সত্ত্বেও কিভাবে  পোষ্য কোটায় চাকরি পেলেন জানতে চাইলে আবুল কাশেম বলেন,চাকরির সময় আমার সঠিক সার্টিফিকেট জমা দিয়েছি। পুলিশ ভেরিফিকেশন কিভাবে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, যথানিয়মে ভেরিফিকেশন করে নিয়েছি। তবে তাঁর নানার বংশে মুক্তিযোদ্ধা থাকার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছাঃ রাহেলা পারভীন বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। জেলা প্রশাসক যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেই প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!