AB Bank
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন যুগেও নির্মান হয়নি সংযোগ রাস্তা


Ekushey Sangbad
রায়গঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
০৪:২৮ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন যুগেও নির্মান হয়নি সংযোগ রাস্তা

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। একমাত্র পথ ধানক্ষেতের কর্দমাক্ত সরু আইল দিয়ে স্কুলে যেতে হয় তাদের। ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো রাস্তা তৈরি করা হয়নি।


সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, বিদ্যালয়টির চারপাশেই ধানক্ষেত। ধানক্ষেতের সরু ও কাদাযুক্ত আইল দিয়ে পায়ে হেঁটে কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে সব শ্রেণী মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১৭ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে জান্নাত বলেন, যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ কারণে ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে আসতে চায় না। এই বর্ষা মৌসুমে সমস্যা আরো বেড়ে যায়। জমির আইল বরাবর একমাত্র পথ বৃষ্টি হলে কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। তবে এই প্রতিষ্ঠানে তার ৬ বছরের চাকুরি জীবনে অনেক সরকারি দফতরে ঘুরে ঘুরেও কোন প্রকার লাভ হয় নি বলে আক্ষেপ করে জানান।


এ বিষয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির সভাপতি বলেন, রাস্তা না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ভোগের কথা বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ কারণে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বেংনাই উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই যাতায়াতের কোন রাস্তা নেই। রাস্তা না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে চায় না। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, রাস্তা না থাকায় বাচ্চারা স্কুলে যেতে চায় না। বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি । এ জন্য মাঝে মধ্যে স্কুলে গিয়ে বাচ্চার জন্য বসে থাকতে হয়। 


বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা কালীন সময় থেকে চাকুরি করা সহকারী শিক্ষক লিয়াকত আলী বাবু বলেন, রাস্তা না থাকায় অনেক ভোগান্তি হয়। স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে চায় না। অভিভাবকরা বাচ্চাদের দিতে চান না। বর্ষা মৌসুমে আরো বেশি সমস্যা হয়। জমির আইল দিয়ে আসতে গিয়ে বইখাতা ভিজে যাওয়ারও ঘটনাও ঘটছে। শুরুর দিকে প্রায় ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল। এখন সব শ্রেনী মিলিয়ে পড়ে ১১৭ জন। রাস্তা না থাকার কারণে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নও হচ্ছে না। দুর্ভোগের কথা বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।


বিশেষ করে বিদ্যালয়ের পড়–য়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ধানক্ষেতের কর্দমাক্ত সরু আইল দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতে হয় বছরের পর বছর। এ বিদ্যালয়ে ৬ জন শিক্ষক কর্মরত থেকে পাঠদান করাচ্ছেন। ৩৩ শতাংশ জমিতে ৩ টি শ্রেনী কক্ষ ও ১ টি অফিস কক্ষের ১ তলা ভবন নির্মীত হলেও আজ পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার জন্য কোন রাস্তা নির্মাণ হয়নি। বছর জুড়ে স্কুলের চারপাশের জমিতে পানি জমে থাকে।


এই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী জায়েদা খাতুনের বাবা বলেন, এখানে স্কুল করেছে কিন্তু রাস্তা করবে কবে ? এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। আমার মেয়ে একদিন স্কুলে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়েছিল। আমিও একদিন স্কুলে মেয়ের টিফিন দিতে গিয়ে পড়ে যাই। বর্ষাকালে এ ধরনের সমস্যা আরো বেশি হয়। চতুর্থ শ্রেনীর ইলা খাতুন ও পঞ্চম শ্রেনীর রিয়া মনি খাতুনের সাথে কথা হলে তারা জানায়, এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। অনেকে ধানক্ষেতের কর্দমাক্ত সরু আইল দিয়ে যাতায়াতের সময় পানিতে পড়ে যায়। আবার আমাদের স্কুল মাঠে পানি কাদা থাকায় আমরা ভালোভাবে খেলতেও পারি না।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. ইমরুল হোসেন তালুকদার বলেন, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কথা ভেবে বিদ্যালটির সামনে একটি কালভার্ট অনেকদিন আগেই নির্মাণ করা হয়েছিলো কিন্তু কালভার্টের সংযোগ স্থল থেকে মেইন রাস্তাটি অনেক উচুঁ থাকায় সেখানে সংযোগ সড়ক নির্মাণ সম্ভব হয়নি। কালভার্টটি রিমুভ করার প্রকৃয়া চলমান আছে । দ্রুত রিমুভ করে সংযোগ রাস্তাসহ ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।


বিদ্যালয়ের এমন দুরবস্থার বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুরবস্থার বিষয়টি জেনেছি যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপেল মাহমুদ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের রাস্তার দূর্বস্থার কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ


 

Link copied!