খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ডিবেটিং ক্লাব নৈয়ায়িক আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘চতুর্থ নৈয়ায়িক ন্যাশনালস্ ২০২৫’ এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ডিবেটিং ক্লাব।
শনিবার (২৩ আগস্ট) প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডে যবিপ্রবির দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ডিবেটিং ক্লাবকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়।
আয়োজক সূত্র জানায়, এবারের প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮টি দল অংশ নেয়।সেখান থেকে সেরা দল হিসাবে কোয়ারর্টার ফাইনাল থেকে সেমি ফাইনাল ও সেমিফাইনাল থেকে ফাইনালে যায় যবিপ্রবি।
ফাইনাল পর্বের বিতর্কের বিষয় ছিল ‘এই সংসদ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন ভঙ্গের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের চাইতে রাজনৈতিক দলগুলোকে বেশি দায়ী মনে করে।’
প্রস্তাবনার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে যুক্তিতর্কেরলড়াইয়ে যবিপ্রবি ডিবেটিং ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়।চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলেন নাঈম জামান, শাহরিয়ার কবির ও আসিফ আলভি। ডিবেটর অব ফাইনাল নির্বাচিত হন বিইউপি ডিবেটিং ক্লাবের লিমন।প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেট ফোরামের ফাহিম।
প্রতিযোগিতা শেষে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।
এ সময় তিনি বলেন, বিতর্ক হচ্ছে আত্ম-উন্নয়নের এক উৎকৃষ্ট ক্ষেত্র। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিবেটিং ক্লাবে যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের বহুমাত্রিকভাবে দক্ষ করে তুলতে পারে। এটি শুধু একাডেমিক ক্ষেত্রেই নয়, ভবিষ্যৎ পেশাগত জীবনেও তাদের জন্য মূল্যবান অভিজ্ঞতা তৈরি করে। নৈয়ায়িকের এ আয়োজন প্রাণবন্ত এবং অনুপ্রেরণাদায়ী হয়েছে।
বিতর্ক চর্চার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রস্তুত করছে- এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক, কবি ও সাংবাদিক আব্দুল হাই শিকদার।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে তরুণ বিতার্কিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের ভুল-ত্রুটি চিহ্নিত করতে পারে।
মুক্তচিন্তার আলোচনার মধ্য দিয়েই আগামী দিনের শ্রেষ্ঠ নাগরিক তৈরি হবে। এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের যোগ্য ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে। তিনি জুলাই আন্দোলনে শহিদ মীর মুগ্ধ, আবু সাঈদ, আনাছসহ সকল শহিদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ খান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত ও টিআইবির ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জাফর সাদিক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৈয়ায়িক সভাপতি হিজবুল্লাহ তামিম। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন। এ সময় অংশগ্রহণকারী দলের প্রতিনিধি, প্রতিযোগিতার বিচারক ও নৈয়ায়িকের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে