টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মোট ১১৩ কোটি ৭ লক্ষ টাকার বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মোট বাজেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ও বাংলাদেশ বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বিমক) কর্তৃক বরাদ্দ ১০৬ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা।
পূর্ববর্তী অর্থবছর (২০২৪-২০২৫) এ বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিলো ১০১ কোটি ৯৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মোট বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ১০.৮৭%।
বাজেটে সবচেয়ে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রাথমিক যানবাহন বাবদ অনুদান খাতে। এই খাতে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৬. ৬৭ শতাংশ। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এই খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল মাত্র ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা যা এই অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ২২ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে অর্থাৎ বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা।
গবেষণা অনুদান বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪. ৮৫ শতাংশ যা ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ছিল ২ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। বর্তমান অর্থবছরে গবেষণা অনুদানে বরাদ্দ করা হয়েছে ২ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা অর্থাৎ ৩৪ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
পন্য ও সেবা বাবদ সহায়তায় (সাধারণ ও মেরামত) মোট বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.২৩ শতাংশ। যা ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ছিল ২৪ কোটি ৩২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। বর্তমান অর্থবছরে (২০২৫-২০২৬) বরাদ্দ করা হয়েছে ২৫ কোটি ৮৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা অর্থাৎ ১ কোটি ৫১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মোট বেতন বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ৭.৮৮ শতাংশ যা ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ছিল ৩৮ কোটি ৮৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমান অর্থবছরে (২০২৫-২০২৬) ৪১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ভাতা বাবদ বর্তমান অর্থবছরে (২০২৫-২০২৬) ২৯ কোটি ১৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পেনশন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা।
তবে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা যা গত বছরে ছিল ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা অর্থাৎ ৩০ লক্ষ টাকা কম বরাদ্দ হয়েছে।
যন্ত্রপাতি অনুদানে বরাদ্দ বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯.১৩ শতাংশ যা ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ছিল ৩ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। বর্তমান অর্থবছরে (২০২৫-২০২৬) ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বাবদ সহায়তা পূর্ববর্তী অর্থবছরে ৪৬ লক্ষ টাকা থেকে বর্তমান অর্থবছরে ১ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি করে ৪৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
এই অর্থবছরেঅন্যান্য অনুদান বাবদ ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অন্যান্য মূলধন অনুদানে বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। এই বাজেটে শিক্ষার্থীপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫২৪ টাকা।
বাজেট বিষয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ারুল আজীম আখন্দ জানান,আমরা চলতি অর্থবছরে একটি উল্লেখযোগ্য বাজেট বরাদ্দ পেয়েছি। এর একটি বড় অংশ বেতন-ভাতাদির জন্য বরাদ্দ থাকবে। তবে অবশিষ্ট অংশটি যেন শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রমে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, সেদিকে আমরা অগ্রাধিকার দেব। আমরা চাই এই বাজেট থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সবারই যেন সরাসরি উপকার হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবেচনায় গবেষণায় বরাদ্দ যথেষ্ট কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা বেশি বাজেট বরাদ্দ পেয়েছি। এই অর্থ যেন সঠিকভাবে ইউটিলাইজ হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। প্রকল্প প্রস্তাবনা যারা তৈরি করেন, তাদের কিছু সম্মানী দেওয়া হয়—তবে এ বরাদ্দ আরও বাড়ানো গেলে ভালো হতো। কারণ, পর্যাপ্ত উৎসাহ ও প্রণোদনা ছাড়া নতুন উদ্ভাবন সম্ভব নয়। যদি আমরা আগামী প্রজন্মকে বিজ্ঞাননির্ভর করে গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমরা পিছিয়ে পড়ব। তাই গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
একুশে সংবাদ/এ.জে