যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ‘এয়ারটেল আড্ডা`র কনসার্ট ঘিরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন ও অন্যান্য মাদক দ্রব্য সেবনের আসর। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বহিরাগতদের আনাগোনায় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে প্রবেশ করে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহন পার্কিং করে খোলামেলা আড্ডা দিতে থাকেন, যাতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও হলের পরিবেশ বিঘ্নিত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার (২৭ মে) এয়ারটেল আয়োজিত কনসার্টে সন্ধ্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, জিমনেশিয়ামের পেছনের সড়ক , কবি নজরুল একাডেমিক ভবন ও জিমনেসিয়ামের মাঝামাঝি সড়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্কেটবল প্রাঙ্গণ, উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন এলাকা সহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করেন অনুষ্ঠানে আগত দর্শকরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাদকদ্রব্য গ্রহণকারীদের হাতেনাতে ধরলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কিংবা আয়োজক কমিটির কোন সদস্যের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণের ঘটনায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সিয়াম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বহিরাগতদের অনায়াসে প্রবেশ এবং প্রশাসনের তেমন কোনো তদারকি না থাকায় আজ ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভয়াবহ আকার ধারণা করেছে। গানের অনুষ্ঠান হতে পারে, কিন্তু তার আড়ালে মাদকসেবনের সুযোগ দেওয়াটা খুবই নিন্দনীয়।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এ ধরনের আয়োজনে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি থাকা উচিত ছিলো। তা না হলে আমাদের সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা দুটিই প্রশ্নের মুখে পড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কোনো সদস্যকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। তবে মাদক সেবনের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার মুখে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি প্রক্টর ড. এস এম নূর আলম বলেন, প্রবাহ সাংস্কৃতিক সংঘের উদ্যোগে এয়ারটেল কনসার্টের আয়োজন করেছে। এখানে আইডি কার্ড প্রদর্শনপূর্বক যেকোনো ক্লাসের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে অনুমতি নেয় এয়ারটেল কোম্পানি। কিন্তু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কনসার্ট উপভোগের পরিবর্তে গাঁজা-মাদক সেবন করবে তা কল্পনা করতে পারেনি। কয়েকজন বহিরাগত স্কুল শিক্ষার্থীকে গাঁজাসহ আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মাদক ও বহিরাগতদের অবাদে হলে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে তাৎক্ষনিকভাবে মুন্সী মেহেরুল্লাহ হলের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয় হল প্রশাসন। তবে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করতে কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
আবাসিক হলে বহিরাগতদের প্রবেশের বিষয়ে মুন্সী মেহেরুল্লাহ হলের প্রভোস্ট বলেন, বহিরাগত প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিলো। তবে কিভাবে তারা প্রবেশ করলো সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। এরপরই প্রভোস্ট বডি হলের প্রবেশপথে অভিযান পরিচালনা করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রেফারেন্স ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখে বহিরাগতদের ছেড়ে দেয়।
একুশে সংবাদ /এ.জে