AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মে দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩:৪৪ পিএম, ১ মে, ২০২৩
মে দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

পহেলা মে (মে দিবস) যা মুলত ১৮৮৬ সালে আমেরিকায় শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে আন্দোলনের বহিঃপ্রকাশকে স্মরণে রাখার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে এই দিনটিকে মে দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। বিশ্বে বাংলাদেশসহ প্রায় ৮০ টি দেশে এই দিনটি পালন করা হয় যথাযথ মর্যাদার সাথে। সেই ১৮৮৬ এর ৮ ঘন্টার দাবিতে প্রকম্পিত এই সমাজ ব্যবস্থা আজও ঠুকরে চলছে, জানিয়ে যাচ্ছে দাবি, সংগ্রাম করছে প্রতিক্ষণে। এ যেন এক মহারণ যুদ্ধের অম্রিয়মান উপাংশ।

 

মে দিবস সম্পর্কে স্নাতক অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে চাইলে তারা বলেন:

জিমি শাহরিয়ার(৩য় বর্ষ) বলেন, ১৮৮৬ সালের শিকাগোর শ্রম আন্দোলনের ১৩৭ বছর পর আমরা যখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে তখনও আমাদের শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার এবং শ্রমিকবান্ধব কর্মস্থল দিতে ব্যর্থ। বরং পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় এরা শোষিত শ্রেণী। শিল্পমালিকেরা উৎপাদন খরচ কমানো এবং অতিরিক্ত মুনাফার লোভে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখেই কারখানা পরিচালনা করেন এবং যার প্রতিফলন যেকোন বড় দূর্ঘটনায় আমরা শ্রমিদের মৃত্যুর মিছিলের  মাধ্যমে দেখতে পাই। তাই শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারের পাশাপাশি শ্রমিকবান্ধব কর্মস্থল নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। তা না হলে অর্থনীতিতে থেকে যাবে শ্রমিকের রক্তের দাগ।

 

জাকিয়া নুর ঐশি (৪র্থ বর্ষ) বলেন, ১৮৮৬ সালের ১লা মে নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা, বৈষম্য দূরীকরণ, ন্যায্য মজুরি আরো অনেক দাবী নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা। তারই ফলস্বরূপ এখন উন্নত দেশগুলোতে শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সুবিধা ও তাদের অবস্থা অনেকটাই উন্নত হয়েছে। কিন্তু অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখনো ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। শ্রমিকদের  অধিকার আদায়ে বেশকিছু আইন প্রনয়ণ হলেও নেই তার প্রয়োগ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক, তবু পাচ্ছে না ন্যায্য মজুরি ও তাদের প্রাপ্য মর্যাদা। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যত দ্রুত সম্ভব এ সকল অসংগতির অবসান ঘটিয়ে শ্রমিক শ্রেণির ন্যায্য অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

 

আফরিন জাহান রাইসা(২য় বর্ষ) বলেন, আসিতেছে শুভদিন, দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ- নজরুল এভাবেই করেন শ্রমজীবীদের বন্দনা! মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস৷ ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে প্রতি বছর আমাদের সামনে হাজির হয়। হাজির হয় কর্ম বিরতি নিয়ে, জাতীয় ছুটি নিয়ে। আর হাজির হয় শ্রমিকের অধিকারের বার্তা নিয়ে। দিবসটির প্রধান দাবি ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস, সরকারি  কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হলেও বেসরকারি খাতে এখনও ৮ ঘণ্টা কর্ম দিবসের সুফল পায়নি।

 

তানজিমুল রিফাত(১ম বর্ষ) বলেন, মে দিবস যা আমেরিকার শিকাগো শহর থেকে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য যে স্ফুলিঙ্গ উদগীরণ হয় পরে তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য যে বিশেষ দিনটি প্রস্তাবিত হয় তা আমরা মে দিবস হিসেবে বর্তমানে আমরা জানি। শ্রমিকরা যাতে বিনা বাধায় নিজের অধিকার এর কথা বলতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্যই মে দিবস। শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সঠিক কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা সহ তাদের সব অধিকার ও সকল সুযোগ সুবিধা যাতে নিগ্রীহিত না হয় সে  সম্পর্কে সকল শ্রমিককে সচেতন করাই মে দিবস এর প্রতিপাদ্য বিষয়। যাদের অবদানের জন্য আমাদের আজকের এই সুবিশাল আধুনিক সভ্যতা আমরা উন্নতির চূড়ান্ত পর্যায়ে তাদের প্রতি সম্মান ও তাদের শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার জন্যই মে দিবস।

 

টিপু সুলতান(২য় বর্ষ) বলেন, রক্তাক্ত এক ইতিহাসের সাক্ষী মে দিবস। শ্রমিকরা সেদিন রক্তের বিনিময়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। দীর্ঘদিনের অমানুষিক পরিশ্রম আর কম পারিশ্রমিক পাওয়া শ্রমিকরা মালিকপক্ষের উপর গর্জে উঠেছিলেন। শ্রমিকদের দাবি ছিল, ‘৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম আর ৮ ঘণ্টা নিজের জন্য’। তারা প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় কাজ করতে হতো কর্তৃপক্ষের নির্দেশে। এই দীর্ঘ কর্মঘণ্টার প্রভাব পড়ে দৈনন্দিন জীবনে। তাদের এই আন্দোলনের ফলে শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে এখনো শ্রমিকরা ভাল ফল পেয়ে আসছে। যদিও অনেক ক্ষেত্রে নিগ্রহের স্বীকার হন তারা।

 

শিক্ষার্থীদের মন্তব্যে স্পষ্ট যে, মে দিবস সবার মনে থাকলেও ধারিত হয়নি এখন কার্যক্ষেত্রে। এর পরিণাম ভাল হবে না তার পুর্বাভাস প্রতিয়মান। এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য সকলেই যথাযথ সম্মান এবং ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়ার বিষয়ে বিশেষ গুরত্ব দিতে হবে।

 

একুশে সংবাদ/এ.হ.প্রতি/এসএপি
 

Link copied!